পহেলা বৈশাখ কেন পালন করা হয়? পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ধারণা
পহেলা বৈশাখ কেন পালন করা হয়? পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ধারণা
পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন বা বাংলা নববর্ষ অনেকেই একে হাজার বছরের সংস্কৃতি হিসেবে উল্লেখ করেন আসলে কি বাংলা নববর্ষ উদযাপন হাজার বছরের পুরনো কিভাবে বাংলা বছর গণনা শুরু হয়েছিল তা জানবো পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ত্রিপুরায় নববর্ষ উৎসব হিসেবে পালিত হয় এটি বিশ্বব্যাপী বাঙ্গালীদের একটি সর্বজনীন উৎসব হিসেবে বিবেচিত অতীতে বাংলা নববর্ষ ছিল প্রধানত কৃষিনির্ভর ও অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত জমিদারের পূর্ণা খাজনা আদায় থেকে হালখাতা সবক্ষেত্রেই অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশে ছিল এর প্রধান উদ্দেশ্য .
পহেলা বৈশাখ কত তারিখ বাংলাদেশ এবং ভারতে:
পহেলা বৈশাখ বা পয়লা বৈশাখ (বাংলা পঞ্জিকার প্রথম মাস বৈশাখের ১ তারিখ) বঙ্গাব্দের প্রথম দিন, তথা বাংলা নববর্ষ.
পশ্চিমবঙ্গে চান্দ্রসৌর বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়।
বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়।
বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখের প্রবর্তক কে:
"বৈশাখ" শব্দটি এসেছে বিশাখা নামক নক্ষত্রের নাম থেকে। এই মাসে বিশাখা নক্ষত্রটিকে সূর্যের কাছে দেখা যায়। বৈষ্ণব পঞ্জিকায় একে মধুসূদন মাস বলে।
বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে হালখাতা করা হয়:
প্রবর্তনের ভিত্তি ছিল হিন্দু সৌর পঞ্জিকা এবং সে পঞ্জিকার নাম ছিল শত বর্ষ পঞ্জিকা পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা বারো মাস অনেককাল আগে থেকেই প্রচলিত ছিল বর্ষপঞ্জির প্রথম আসছিল চৈত্র মাস 1963 হিজরীতে চন্দ্র সনের প্রথম মাস মহরম ছিল বাংলা বৈশাখ মাসের তাই তখন থেকে বৈশাখকে বাংলা বছরের প্রথম মাস হিসেবে গণনা করা শুরু হয় মূল সময় থেকেই পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কিছু অনুষ্ঠান করা হতো তখন প্রজারা বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সকল খাজনা মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে বাধ্য থাকতো এর পরদিন পহেলা বৈশাখে জমিদারগণ প্রজাদের মিষ্টিমুখ করাতে এবং কিছু আনন্দ উৎসব করা হতো এছাড়া বাংলার সকল ব্যবসায়ী ও দোকানদার পহেলা বৈশাখে হালখাতা করা হতো .
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানটি দিয়ে সর্বপ্রথম শহুরে বর্ষবরণের যাত্রা:
লাল কাপড়ের মলাটে মোড়ানো নতুন এই হিসাব খাতার উপরে লেখা হতো এলাহি ভরসা এই শব্দটির ব্যবহার সম্রাট আকবরের দ্বীন-ই-ইলাহী তারিখ ই এলাহি থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয় প্রথম আধুনিক নববর্ষ উদযাপন করা হয় 1917 সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্ত্তণ ও পূজার ব্যবস্থা করা হয় বর্তমান পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জনপ্রিয় ধরনটি এসেছে মূলত এক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন আইয়ুব সরকারের আমলে পাকিস্তানের রবীন্দ্র সংগীত চর্চা নিষিদ্ধ করা হয় বাঙালি সংস্কৃতি চর্চা বিরোধিতার প্রতিবাদস্বরূপ চায়নার 1965 সালের 14 ই এপ্রিল রমনার বটমূলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানটি দিয়ে সর্বপ্রথম শহুরে বর্ষবরণের যাত্রা.
30 শে নভেম্বর জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে:
এ স্থানটি রমনার বটমূল হিসেবে পরিচিত হলেও প্রকৃতপক্ষে যে গাছের ছায়ায় মঞ্চ তৈরি করা হয় সেটি বটগাছ নয় একটি অশ্বত্থ গাছ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে ঢাকা শহরে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় 1989 সাল থেকে বর্তমান শহুরে নববর্ষ উদযাপনের এক অন্যতম আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রা 2016 সালের 30 শে নভেম্বর জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে.
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url