কোন পদ্ধতিতে খুব তাড়াতাড়ি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়?
কোন পদ্ধতিতে খুব তাড়াতাড়ি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়?
শরীর সুস্থ রাখা তো বটেই, তবে ‘ভাল’ ডায়েটের অন্যতম অবদান শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানো। জন্মের সময় আমরা প্রত্যেকেই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ শারীরিক ক্ষমতা বা ‘বায়ো-এনার্জি’ নিয়ে জন্মাই। তা-ই নির্ধারণ করে আমাদের প্রাথমিক ইমিউন ক্ষমতা। তবে সেটাই যে চিরস্থায়ী, তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল, খাওয়াদাওয়া, অভ্যেস যেমন এই ক্ষমতা বাড়াতে পারে, তেমনই দূষণ, চাপ, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়া, ধূমপান বা নেশার মতো অভ্যেস সেই সহজাত ক্ষমতা নিঃশেষও করে দিতে পারে। আমরা খাবার থেকে যেটুকু পুষ্টি পাই, পুরোটাই রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আর রক্তে যদি পুষ্টির বদলে টক্সিন বেশি থাকে, তাহলে তাই পৌঁছয় কোষে কোষে। ফলে দিন শুরু হতে না হতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, ঘন ঘন অসুখ-বিসুখে ভোগা স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়।
ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া না করলে মন-মেজাজও কিন্তু খিটখিটে হয়ে যেতে পারে। অল্পেই রাগ হয়। মানে, বুঝতেই পারছেন, শুধু শরীর নয়, খাবারের ভূমিকা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যস্ত জীবনযাত্রায় সবসময় যে স্বাস্থ্যকর অভ্যেস মেনে চলাও সম্ভব, তা নয়। আর তাই প্রয়োজন সাপ্লিমেন্টের। নিয়মিত লাইফস্টাইলে যে ‘ভুল’গুলো করছেন, তার অনেকটাই সংশোধন করে দেয় সাপ্লিমেন্ট। ইমিউন ক্ষমতাও বাড়ায়, পাশাপাশি শরীর সতেজ ও এনার্জিতে ভরপুর রাখে।
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন ধরনের নিউট্রিয়েন্ট সাপ্লিমেন্টের মধ্যে সেলেনিয়াম শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন-ই সহযোগে এই নিউট্রিয়েন্ট সবচেয়ে ভাল কাজ করে। শরীরের অন্যতম অ্যান্টি- অক্সিড্যান্ট, গ্লুটাথিয়োন পার-অক্সিডেজের পরিমাণ বাড়িয়ে ফ্রি-র্যাডিকাল থেকেও শরীরকে সুরক্ষা দেয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। পাশাপাশি স্ট্রোক, ধমনির কাঠিন্য, ব্রেস্ট ও প্রস্ট্রেট ক্যানসারের আশঙ্কা কমায়। শরীরে সেলেনিয়ামের অভাব হলে, সংক্রমণ ও ডিজেনারেটিভ ডিজ়ি.জ়ের আশঙ্কা বাড়ে, হৃদযন্ত্র এবং নানা ধরনের ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ে। বয়স যত বাড়ে, কোষে সেলেনিয়ামের মাত্রা তত কমে, যা এজিং প্রসেস আরও ত্বরান্বিত করে। অনেক
গবেষণাতেই প্রমাণিত হয়েছে, বয়সজনিত অসুস্থতা, মানসিক এবং শারীরিক অসুখ কমাতে এই নিউট্রিয়েন্ট উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
কী খাবেন?
যদিও রসুন, সূর্যমুখীর বীজ, হোলগ্রেন এবং ব্রাজিলনাটে স্বল্প পরিমাণে সেলেনিয়াম থাকে, তবে এগুলোর কোনওটাই এর নির্ভরযোগ্য উৎস নয়। মাটিতেও এই মিনারেলের পরিমাণ এখন বেশ কম। তাই সাপ্লিমেন্টের চাহিদাও বেশি। অবশ্য
কালো আঙুর, হোলগ্রেন, পেঁয়াজ, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি যদি সেলেনিয়াম-রিচ মাটিতে উৎপন্ন হয়, সেক্ষেত্রে তাতে সেলেনিয়ামের গুণাবলী বজায় থাকে।
কতটা খাবেন?
যদি ইমিউন ক্ষমতা বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়, সেক্ষেত্রে ১০০ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিমায় যথেষ্ট। তবে যদি কেউ অ্যাংজাইটি, অবসাদ বা ক্যানসার, হার্টের অসুখ প্রতিরোধ করার জন্য এই মিনারেল নিতে চান, সেক্ষেত্রে দৈনিক ১৫০-২০০ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিমায় প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনওভাবেই এর চেয়ে পরিমাণ
বাড়াবেন না। সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url