Bitcoin: বিটকয়েন কি? বিটকয়েন কিভাবে তৈরি হয়? বিটকয়েনের সম্পূর্ণ ইতিহাস
Bitcoin: বিটকয়েন কি? বিটকয়েন কিভাবে তৈরি হয়? বিটকয়েনের সম্পূর্ণ ইতিহাস
What is Bitcoin?
Ans: Bitcoin is a decentralized digital currency, without a central bank or single administrator, that can be sent from user to user on the peer-to-peer bitcoin network without the need for intermediaries. Transactions are verified by network nodes through cryptography and recorded in a publicly distributed ledger called a blockchain. Bitcoin is unique in that there are a finite number of them: 21 million. Bitcoins can be divided up to 8 decimal places (0.000 000 01) and can be sent to anyone anywhere in the world instantly.
Q. বিটকয়েন কি?
সর্বপ্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি এ সম্পর্কে যাদের কোনো ধারণা নেই তাদের জন্য সহজ করে বলতে গেলে ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা কোন ধরনের সরকারি বা বেসরকারি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে না ।
Q. বিটকয়েন কিভাবে তৈরি করা হয়?
প্রশ্ন আসতে পারে যেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠান এর অধীনে চলে না এবং এসব মুদ্রা কাগজে ছাপা হয় না তাহলে বিটকয়েন কিভাবে তৈরি হয় বিট কয়েনের মতো ডিজিটাল কারেন্সি তৈরি করার পদ্ধতিকে বলা হয় মাইনিং।
● একটি বিটকয়েন এর দাম কত?
অবশ্য খনি থেকে সোনা রুপা উত্তোলনের মতো বিষয় নয় অতীতে এক বিটকয়েনের দাম সর্বোচ্চ 55 লক্ষ টাকা পর্যন্ত উঠেছে আর বর্তমানে 1 বিট কয়েনের মূল্য প্রায় সাড়ে সতেরো লক্ষ টাকা বিটকয়েন মাইনিং কি এবং কিভাবে বিটকয়েন মাইনিং করা হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
● বিটকয়েন কিভাবে মাইনিং করা হয় এবং বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে:
বিটকয়েন মাইনিং সম্পর্কে আলোচনার আগে বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা করা জরুরি । আমরা নিরাপদে অর্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে বিশ্বাস করে আমাদের কষ্টার্জিত টাকা জমা রাখি কিন্তু কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের টাকা নিয়ে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলে 2008 সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা তার অন্যতম উদাহরণ । সেই মন্দার জন্য সুযোগ ব্যাংক ঋণ গ্রহীতা ব্যবসায়ীরা দায়ী নয় আমেরিকান সরকারের ভুল পলিসি এবং অব্যবস্থাপনা ও এর অন্যতম কারণ। সেই অর্থনৈতিক মন্দায় বহু প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায় এরকম পরিস্থিতিতে এক নতুন ধরনের মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটে যার নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি আর এই ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রথম পরীক্ষামূলক মুদ্রা হল বিটকয়েন 2009 সালে সাতোশি নাকামোতো আলফি নামের এক ব্যক্তি কে প্রদানের মাধ্যমে বিটকয়েন লেনদেনের সূচনা করেন । বিটকয়েন হলো peer-to-peer ব্যবস্থা অর্থ এবং প্রাপকের কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে সরাসরি বিটকয়েন লেনদেন সম্পন্ন হয়।
তাই এখানে কোন প্রতিষ্ঠান দরকার পড়েনা লেনদেনকারী ব্যক্তি বেতিতো তৃতীয় কারো পক্ষে এই ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় মনে করি কোন একজন ব্যক্তি জাপান থেকে কানাডায় বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্থ পাঠাবে এক্ষেত্রে জাপানি বা কানাডিয়ান কোনো ব্যাংক বা সরকার কারও কোন ধরনের সহায়তা লাগবে না । এমনকি এই দুই দেশের সরকার কোন প্রকার নজরদারিও করতে পারবে না ।
● ক্রিপ্টোগ্রাফি বলতে কি বুঝায়?
কার কাছে কত টাকা পাঠানো বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি ধরনের আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলে ক্রিপ্টোগ্রাফি । ক্রিপ্টোগ্রাফি তারা লেনদেনের সত্যতা যাচাই করা হয় অর্থাৎ একজন বলল যে আমি দশ বিটকয়েন পাঠাবো এখন তার কাছে 10 বিটকয়েন আছে কিনা তা ক্রিপ্টোগ্রাফি মাধ্যমে যাচাই করা হয় ব্যাংকে যেমন কেন্দ্রীয় একটি সার্ভারে সব অ্যাকাউন্টের তথ্য থাকে সেখান থেকে সবার টা আমাশার হিসাব রাখা হয়। কিন্তু বিটকয়েনে যেহেতু কোনো কর্তৃপক্ষ নেই তাহলে এই সত্যতা যাচাইয়ের কাজটিকে করবে । এখানে আসে মাইনিং এর কাজ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার ভলেন্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবক এই কাজটি করে থাকে লেনদেন প্রক্রিয়া সচল রাখতে সহায়তা করে তাদের একাউন্টে লেনদেন এর অংশ হিসেবে একটি নির্দিষ্ট পরিমান বিটকয়েন জমা হয় তার মানে ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যে অর্থ পাওয়া যায় তাকেই বিটকয়েন মাইনিং বলা হয়। লেনদেনের জন্য এত জটিল পদ্ধতি কেন তৈরি করা হয়েছে এর কারণ হলো কম্পিউটারে লেখা যেকোনো জিনিস কপি-পেস্ট করে মুহূর্তের মধ্যেই দ্বিগুণ-তিনগুণ যত খুশি ততো উৎপাদন করা যায় তাই এর লেনদেনের প্রক্রিয়া কম্পিউটারের সাধারণ ভাষায় লেখা হলে যে কেউ কপি পেস্ট করে তার টাকা বাড়িয়ে নিতে পারতো এই বিষয়টি বন্ধ করার জন্য ক্রিপ্টোগ্রাফি বা এক ধরনের গোপন ভাষায় লেনদেনের হিসাব লিপিবদ্ধ করা হয়।
● ব্লকচেইন কি এটা কিভাবে কাজ করে?
এই পদ্ধতিকে বলে ব্লকচেইন ব্লকচেইন কে এক ধরনের উন্মুক্ত হিসেবের খাতা সাথে তুলনা করা যায় ব্যাংকের লেনদেনের হিসাব ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কখনই আপনার সামনে প্রকাশ করবে না আপনি সেই ব্যাংকের গ্রাহক হলেও না কিন্তু ব্লকচেইন এর মাধ্যমে লেখা বিটকয়েনের প্রতিটি লেনদেন সবার জন্য উন্মুক্ত পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে আপনি এই হিসেব দেখতে পারবেন ।
একসাথে অসংখ্য কম্পিউটারে এর তথ্য সংরক্ষিত থাকার কারনে কোন এক জায়গায় পরিবর্তনের মাধ্যমে বিটকয়েন এর তথ্য বদলানো যায় না । সে কারণে বিখ্যাত সুরক্ষিত একটি ব্যবস্থা বিটকয়েন লেনদেন যত বাড়ছে সেই সাথে বিটকয়েন মাইনিং করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠছে।
কয়েক বছর আগেও সাধারন বাসাবাড়ির কম্পিউটারেই মাইনিং করা যেত তখন মানুষ অবসর সময়ে উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েন মাইনিং করত অনেকে রাতের বেলা ল্যাপটপের বিটকয়েন মাইনিং এর প্রসেস শুরু করে ঘুমাতে যেত সকালে এসে দেখতে অনেক বিটকয়েন জমা হয়ে আছে।
● বর্তমানে বিটকয়েন মাইনিং খুব কঠিন একটি কাজ:
অতীতে বিটকয়েন মাইনিং সহজ ছিল কিন্তু বর্তমানে বিটকয়েন মাইনিং মোটেও সহজ কাজ নয় বর্তমানে মাইনিং করে লাভজনক অবস্থায় পৌঁছাতে বহু কোটি টাকা খরচ করে কমপক্ষে ছোটখাটো একটি ডাটা সেন্টার গড়ে তুলতে হয়। তারপরও এই বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই।
এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বড় বড় কোম্পানি বিটকয়েন মাইনিং ফার্ম গড়ে তুলছে বিটকয়েন মাইনিং গড়ে তোলার জন্য দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো যেখানে ফান্ড গড়ে তোলা হবে সেখানকার আবহাওয়া এবং সেই দেশে বিদ্যুতের দাম লাভজনক বিটকয়েন মাইনিং ফার্ম গড়ে তোলার জন্য ।
● বিটকয়েন মাইনিং ফার্ম সম্পর্কে কিছু ধারনা:
হাজার হাজার কম্পিউটার দিনরাত চালিয়ে রাখতে হয় এইসব কম্পিউটারে আবার আরও কয়েক হাজার 900 ক্ষমতাসম্পন্ন জিহ্বার গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো থাকে এসব একেকটি গ্রাফিক্স কার্ডের প্রসেসিং পাওয়ার সাধারণ কম্পিউটারের সিপিইউ এর চেয়েও অনেক গুণ বেশি এক ছাদের নিচে এত এত ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং কম্পিউটার থাকার কারণে এগুলো স্বভাবতই অত্যন্ত গরম হয়ে ওঠে তাই প্রাকৃতিকভাবে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা অঞ্চল কে বিটকয়েন মাইনিং এর জন্য বেছে নেওয়া হয় ।
বর্তমানে বেশিরভাগ বিটকয়েন ফার্ম গড়ে উঠেছে শীতপ্রধান দেশ গুলোতে সে কারণে রাশিয়া কানাডা আইসল্যান্ড নয় যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সবচেয়ে বেশি বিটকয়েন মাইনিং ফার্ম রয়েছে এসব জায়গায় কম্পিউটার ঠান্ডা রাখার জন্য খুব বেশি খরচ করতে হয় না।
এরপরে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিদ্যুতের দাম এত কম্পিউটার একসাথে চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ এর দরকার হয় কোন এলাকার বিদ্যুতের দাম যদি বেশি হয় সেখানে বিটকয়েন ফার্ম চালানো সম্ভব নয়।
পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা বিদ্যুৎ সংযুক্ত এলাকাগুলোতে বিটকয়েন গড়ে তোলার পরও বেশ কিছু বিটকয়েন ফার্মের মাসিক প্রায় 10 কোটি টাকারও বেশি বিদ্যুৎ বিল আসে। উৎপাদন এত কঠিন এবং ব্যয়বহুল হবার পরও এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে প্রতিটি বিটকয়েন 10 কটি ভাগে বিভক্ত ।
● সারাদিন মাইনিং করে কত বিটকয়েন উৎপাদন করা যেতে পারে:
প্রতিদিন হাজার হাজার প্রতিষ্ঠান এবং লক্ষ ব্যক্তির মাইনিং এর মাধ্যমে মাত্র 900 বিটকয়েন উৎপাদিত হয় । তবে বিটকয়েন চাইলেই ইচ্ছামত উৎপাদন করা যায় না। বিটকয়েনের সংখ্যা কখনোই 21 মিলিয়ন বা দুই কোটি 10 লাখের বেশি হবে না এখনো পর্যন্ত 19216801 উৎপাদন হয়েছে এবং মাত্র 17 লক্ষ 46 হাজার বিটকয়েন উত্তোলনের জন্য অবশিষ্ট আছে এই পরিমাণ বিটকয়েন মাইনিং এর পর নতুন করে আর কোন বিটকয়েন উৎপাদন করা যাবেনা।
● সারা বিশ্বের বিটকয়েনের তথ্য:
বিটকয়েন মাইনিং করে যে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায় তা দিন দিন কমে আসছে কিন্তু ধারণা করা হয় বর্তমানে সারা পৃথিবীতে প্রায় লক্ষাধিক বিটকয়েন মিলিয়নিয়ার রয়েছে তার মানে প্রায় 1 লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রত্যেকের কাছে কমপক্ষে 10 কোটি টাকা মূল্যের বিটকয়েন রয়েছে একই রকমভাবে বর্তমানে মাত্র 23 জন বিলিয়নিয়ার রয়েছে বাস্তবে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে ।
কারণ অনেকেরই একাধিক বিটকয়েন একাউন্ট আছে । সবাইকে ধন্যবাদ যদি কারো আরো কিছু জানার থাকে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url