Retirement planning: পোস্ট রিটায়ারমেন্ট প্ল্যানিং কিভাবে করবেন তার সম্পূর্ণ পরামর্শ
Retirement planning: পোস্ট রিটায়ারমেন্ট প্ল্যানিং কিভাবে করবেন তার সম্পূর্ণ পরামর্শ
স্বামী অবসর নেওয়ার পর থেকেই মনমরা, অথচ আপনাকে এখনও কর্মসূত্রে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই নিয়ে মনোমালিন্য আর দূরত্ব বেড়েই চলেছে? সমস্যা সামলানোর বিশেষ কিছু পরামর্শ রইল এখানে।
সুজয় অবসর নেওয়ার পর থেকে সব সময় মনমরা থাকে। বাড়ির কারও সঙ্গে প্রায় কথাই বলে না। কোনও কাজ করতে ওঁর ভাল লাগে না। আত্মীয়-স্বজন এলে উঠে অন্য ঘরে চলে যায়। অথচ এরকমটা যে হবে, সে তো জানাই ছিল। নির্দিষ্ট দিনেই অবসর নিয়েছে সুজয়। তাই এই নিয়ে কোনও আক্ষেপ বা অভিযোগ থাকার কথা নয়। সমস্যা আরও বেড়ে যায়, যখন কেয়া আর ওদের দুই ছেলেও অফিস, কলেজে বেরিয়ে যায়। এই একা থাকাটা বা বাড়িতে থাকাটা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না ওঁ। বারবার কেয়াকে চাকরিটা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। কেয়ার চাকরির মাত্র এক বছর বাকি। এই অবস্থায় চাকরি ছাড়া সম্ভব নয়। এই এক বছরটাও সুজয় মেনে নিতে নারাজ। ফলে দু’জনের মধ্যে সমস্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। আগে রেগে গেলে সুজয় ঝগড়া করত, কিন্তু এখন ক্রমশ নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকে। মনে হয়, ওঁ যেন থেকেও নেই। কেয়ার ছুটি থাকলেও কোথাও একসঙ্গে ঘুরতে যেতে চায় না। ছেলেদের ব্যাপারেও কোনও উৎসাহ নেই ওঁর। আগে বই পড়তে, গান শুনতে ভালবাসত, এখন সে সবও পছন্দ করে না। সারাক্ষণ একা ঘরে চুপচাপ বসে থাকে। কী করে এই সমস্যা সামলাবে বুঝতে পারে না কেয়া।
নতুন ভাবনা :
এতদিন কাজ করার পর হঠাৎ করে বাড়িতে থাকতে সবারই একটু খারাপ লাগে। তাই ওঁর মানসিক অবস্থাটা বোঝার চেষ্টা করুন। যতটা সম্ভব স্বামীকে সময় দিন। অন্তত প্রথম কয়েকটা দিন আপনি ছুটি নেওয়ার চেষ্টা করুন। ওঁকে বলুন আপনি ওঁর সঙ্গে আছেন। একবার অ্যাডজাস্ট হয়ে গেলে আপনার স্বামী আর নিজেকে এত একা মনে করবেন না।
প্ল্যান করুন যখন আপনারা একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন তখন কী কী করবেন বা কোথায় যাবেন। বাড়িতে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়-স্বজন এলে কী মেনু হবে, কারা নিমন্ত্রিত হবে—এই সব কিছু ঠিক করার দায়িত্ব দিন ওঁকে। এতে আপনারও কাজের চাপ কিছুটা কমবে, আবার আপনার স্বামীও এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারবেন।
সঙ্গীকেও উৎসাহ দিন নতুন কিছু করতে, নতুন করে জীবনটা আবার শুরু করতে। কাজের চাপে আগে যা যা শেখার ইচ্ছে ছিল বা করার ইচ্ছে ছিল, অথচ করে উঠতে পারেননি, সেগুলো এই সময় করতে বলুন। আপনাকে অফিসে যেতে হচ্ছে বলে অপরাধ বোধে ভুগবেন না। বরং স্বামীকে বলুন রিভার্স রোল প্লে করার চেষ্টা করতে। এতদিন যেমন শত ব্যস্ততার মধ্যেও অফিসে বেরোনোর আগে আপনি সব কিছু গুছিয়ে দিতেন, তেমনই স্বামীকে বলুন আপনাকে সাহায্য করতে।
স্বামীকে বোঝান, এই সময়টা খুব মূল্যবান। এতদিন কাজ করার পর বিশ্রামের এই সময়টা পুরোপুরি উপভোগ করার জন্য ওঁকে উৎসাহ দিন। বন্ধুদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ গড়ে তুলতে বলুন। ওঁকে বলুন বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও বেড়িয়ে আসতে বা বাড়িতে গেট টুগেদারের আয়োজন করতে।
আপনার স্বামী আবার কাজ করতে চাইলে, পার্ট-টাইম বা কম স্ট্রেসফুল কোনও কাজ করতে উৎসাহ দিন। ইন্টারনেট বা বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি খুঁজতে ওঁকে সাহায্য করুন। কোনও ফিটনেস সেন্টার বা ল্যাঙ্গোয়েজ ক্লাসে স্বামীকে এনরোল করে দিন। কোনও হবি ক্লাসেও ভর্তি হতে বলতে পারেন। দিনের বেশ কিছুটা সময় তাহলে উনি এইসব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারবেন।
ছেলে-মেয়েকে বলুন একটু বেশি বাবার খোঁজ নিতে, যতটা সম্ভব সময় বাবার সঙ্গে কাটাতে। উইকএন্ডে সবাই মিলে একসঙ্গে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসুন।
কী করবেন:
অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে কোনও কোনও দিন সিনেমার নাইট শোয়ের টিকিট কেটে আনুন। অপ্রত্যাশিতভাবে আপনার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ পেলে আপনার স্বামী খুশিই হবেন। কাজের ফাঁকে ফোন করে বা টেক্সট করে স্বামীর খোঁজ নিন। এতে ওঁর একাকিত্ব কিছুটা কমবে।
বাড়িতে ওঁর অফিস কলিগদের নিমন্ত্রণ করে ওঁকে সারপ্রাইজ় দিন।
ওঁকে কিছুটা সময় নিজের মতো করে কাটাতে দিন। এমন কিছু করবেন না যাতে ওঁর মনে হয় যে আপনি জোর করে ওঁর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন।

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url