দুর্গাপূজায় ডোনাল্ড ট্রাম্প অসুর! এছাড়া গাজা সংকট ও বাংলার দুর্ভিক্ষের থিমে নজর কেড়েছে কলকাতা
পশ্চিমবঙ্গের পুজো থিম: দুর্গাপূজায় ডোনাল্ড ট্রাম্প অসুর! এছাড়া গাজা সংকট ও বাংলার দুর্ভিক্ষের থিমে নজর কেড়েছে কলকাতা।
দুর্গাপূজা মানেই শুধু আনন্দ, উৎসব আর আলোর রোশনাই নয়। কলকাতার পূজা মণ্ডপগুলো বরাবরই সামাজিক ও রাজনৈতিক বার্তা তুলে ধরার এক অনন্য মাধ্যম। ২০২৩ সালের দুর্গাপূজাতেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এই বছর বেশ কয়েকটি মণ্ডপ তাদের থিমের মাধ্যমে বিশ্ব রাজনীতি, মানবিক সংকট এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে এমনভাবে তুলে ধরেছে যা একদিকে যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনই গভীর চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প অসুর – বিতর্কিত থিমের সাহসী উপস্থাপন
এবারের পূজার সবচেয়ে আলোচিত থিমগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল একটি মণ্ডপে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসুরের রূপে উপস্থাপন করা। এই থিমটি নিঃসন্দেহে সাহসী এবং বিতর্কিত। সাধারণত, দুর্গাপূজায় অসুর অশুভ শক্তির প্রতীক। একজন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই রূপে দেখানো আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তার ভূমিকা এবং কার্যকলাপের প্রতি এক ধরনের সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে।
এই থিমটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যেমন পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা হয়েছে, তেমনই এটি মণ্ডপে দর্শকদের ভিড় বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে এটিকে শিল্পের স্বাধীনতা এবং প্রতিবাদের একটি শক্তিশালী রূপ হিসেবে দেখেছেন। আবার কেউ কেউ এটিকে অহেতুক রাজনৈতিকীকরণ বলে সমালোচনা করেছেন। তবে, এই থিম যে দেশ-বিদেশের মানুষের নজর কেড়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি প্রমাণ করে যে, কলকাতার দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বিতর্কের জন্ম দেওয়ার এবং মানুষকে ভাবানোর একটি প্ল্যাটফর্মও বটে।
দারুণ খবর! মুর্শিদাবাদের খাগড়া শ্মশান ঘাট পূজা কমিটির এই ব্যতিক্রমী থিমটি নিঃসন্দেহে এবারের দুর্গাপূজার অন্যতম আলোচিত বিষয়।
মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের কাছে খাগড়া শ্মশান ঘাট এলাকার এই পূজা মণ্ডপটি প্রতি বছরই তাদের সাহসী ও অভিনব থিমের জন্য পরিচিত। তবে এই বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসুরের রূপে দেখানোর সিদ্ধান্তটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে নজর কেড়েছে।
কেন এই থিম এত ভিড় টানছে?
১. রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তা: পূজা মণ্ডপটি সম্ভবত বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতে ট্রাম্পের ভূমিকা, বিতর্কিত নীতি বা তার অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতি এক ধরনের প্রতীকী প্রতিবাদ বা সমালোচনা তুলে ধরতে চেয়েছে। অসুরকে অশুভ শক্তির প্রতীক হিসেবে দেখানো—যা মণ্ডপে দেবী দুর্গা দ্বারা পরাজিত হন—এই থিমের মাধ্যমে একটি জোরালো বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
২. নতুনত্বের আকর্ষণ: পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজার মাঝে এমন একটি সমসাময়িক এবং বিতর্কিত চরিত্রকে অসুরের রূপে দেখা দর্শনার্থীদের কৌতূহল বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই অভিনবত্বের কারণেই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা মণ্ডপ পরিদর্শনে ভিড় করছেন।
৩. শিল্পী অসিম পালের কাজ: জানা যায়, মণ্ডপের প্রতিমা ও অসুর শিল্পী অসিম পাল তৈরি করেছেন। তাঁর দক্ষ হাতে ট্রাম্পের প্রতিকৃতিতে অসুরের রূপ ফুটিয়ে তোলার শিল্পশৈলীও বহু মানুষকে আকৃষ্ট করেছে।
৪. সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব: এই ব্যতিক্রমী থিমটি মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায়, দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ শুধু এই থিমটি একবার স্বচক্ষে দেখতে খাগড়া শ্মশান ঘাটে আসছেন।
মোটকথা, খাগড়া শ্মশান ঘাটের এই থিম শুধু একটি পুজো মণ্ডপকে আলোকিত করেনি, বরং শিল্প ও প্রতিবাদের এক দারুণ মেলবন্ধন ঘটিয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।
অবিশ্বাস্য! অসুররূপী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই থিমটি যে সত্যিই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে, তা ভিড় দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এটি স্পষ্টতই দুর্গাপূজা ২০২৩-এর সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয় থিমগুলির মধ্যে অন্যতম।
আপনার দেওয়া তথ্য অনুসারে, মুর্শিদাবাদের খাগড়া শ্মশান ঘাট পূজা কমিটির এই সাহসী পদক্ষেপের কারণেই মণ্ডপে উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে।
কেন এই থিমে এত ভিড়?
১. রাজনৈতিক কৌতূহল: একজন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অসুরের রূপে দেখা, তাও আবার দেবী দুর্গার হাতে পরাজিত হতে—এই রাজনৈতিক এবং প্রতীকী বার্তাটি দেখতেই বহু মানুষ ভিড় করছেন। এটি কেবল একটি থিম নয়, এটি বিশ্ব রাজনীতির প্রতি এক শিল্পসম্মত ব্যঙ্গ।
২. ভাইরাল পরিচিতি: সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে এই থিমটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। দূর-দূরান্তের মানুষ কেবল এই আলোচিত সৃষ্টিটিকে এক ঝলক দেখতে আসছেন।
৩. শিল্পীর মুন্সিয়ানা: শিল্পী অসিম পাল ট্রাম্পের পরিচিত মুখাবয়বটিকে অসুরের চরিত্রে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তার শিল্পগুণও দর্শকদের আকৃষ্ট করছে।
৪. বিতর্কের আকর্ষণ: যেকোনো বিতর্কিত বিষয়ই মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। মণ্ডপ কর্তৃপক্ষের এই সাহসিকতা এবং এর ফলে সৃষ্ট আলোচনা ভিড় বাড়াতে সাহায্য করেছে।
এই থিমটি প্রমাণ করে, কলকাতার দুর্গাপূজা কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ ও সচেতনতা তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url