Rath Yatra 2026: রথযাত্রা 2026 - ক্যালেন্ডার তারিখ | উল্টো রথের তারিখ 2026

 রথযাত্রা হল প্রতি বছর গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত একটি হিন্দু উৎসব। রথ উৎসব নামেও পরিচিত, এটি ভারতের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসবগুলির মধ্যে একটি। Rath Yatra 2026 তিন দেবতা, জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলভদ্রের পূজা করা হয়।

২০২৬ সালের রথযাত্রা ১৫ জুলাই বুধবার, হিন্দুদের জন্য ভারতের অন্যতম বৃহৎ উৎসব, যেখানে তিন দেবতা জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলভদ্রকে স্বীকৃত করা হয়।

রথযাত্রার তারিখ ২০২৬

২০২৬ সালে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে ১৬ই জুলাই, বৃহস্পতিবার

এই পবিত্র উৎসবটি আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে উদযাপিত হয়।

রথযাত্রা ২০২৬ বাংলা তারিখ | Rath Yatra 2026 Bengali Date

২০২৬ সালের রথযাত্রা উৎসবের বাংলা তারিখ ও তিথি নিচে দেওয়া হলো:

  • গ্রেগরিয়ান তারিখ: বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২৬

  • বাংলা বর্ষ: ১৪৩৩ বঙ্গাব্দ

  • বাংলা মাস: আষাঢ় মাস

  • তিথি: শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি

  • উল্টো রথযাত্রা (বাহুড়া যাত্রা): শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২৬ (সাধারণত রথযাত্রার ৯ দিন পর পালিত হয়)।

উল্টো রথের তারিখ ২০২৬

২০২৬ সালে উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে ২৪শে জুলাই, শুক্রবার

রথযাত্রার আট দিন পরে এই উল্টো রথ বা বহুদা যাত্রা উদযাপিত হয়।

2026 সালে রথযাত্রা সাংস্কৃতিক তাৎপর্য এবং উদযাপন

২০২৬ সালে রথযাত্রা উৎসবটি বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। এটি আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়।

রথযাত্রা প্রধানত ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির-এর উৎসব হলেও এটি ভারত, বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মহাসমারোহে পালিত হয়।


রথযাত্রার সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও উদযাপন

রথযাত্রা হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য সুদূরপ্রসারী:

১. সাংস্কৃতিক তাৎপর্য

  • মিলন ও সমন্বয়ের উৎসব: রথযাত্রা মূলত ভগবান জগন্নাথ (শ্রীকৃষ্ণ), তাঁর দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রা-এর নগরভ্রমণ। এই উৎসব জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসে। পুরীতে সকলের হাতের স্পর্শে রথের রজ্জু টানা হয়, যা সর্বধর্ম সমন্বয় এবং সাম্যের প্রতীক।

  • দেহ ও আত্মার প্রতীক: কঠোপনিষদের একটি শ্লোকে মানবদেহকে রথ এবং আত্মাকে রথী বা আরোহী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই প্রতীকী তাৎপর্য অনুসারে, রথযাত্রা ভক্তকে জাগতিক মায়া ও বন্ধন থেকে মুক্তি এবং আধ্যাত্মিক পথে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেয়।

  • গতি ও পরিবর্তনের প্রতীক: রথ 'গতি' এবং 'এগিয়ে চলার' প্রতীক। এটি জীবনের পরিবর্তনশীল পথে নিরন্তর অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়।

  • মোক্ষ লাভ: এই দিনে রথে আরোহণ করা ভগবান জগন্নাথকে দর্শন করলে পুনর্জন্ম হয় না—এমন বিশ্বাস প্রচলিত আছে।

২. উদযাপন

রথযাত্রা উৎসব সাধারণত ন'দিন ধরে চলে, যার মূল আকর্ষণ হল সুসজ্জিত রথে দেব-দেবীকে নিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা।

  • রথ নির্মাণ: পুরীতে প্রতি বছর নতুন করে নিমকাঠ দিয়ে তিনটি বিশাল রথ তৈরি করা হয়—

    • জগন্নাথের রথ: নন্দীঘোষ (পতাকায় কপিরাজ হনুমানের ছবি)।

    • বলরামের রথ: তালধ্বজ।

    • সুভদ্রার রথ: দর্পদলন বা পদ্মধ্বজ।

  • যাত্রা: আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই তিন দেব-দেবী তাঁদের মূল মন্দির থেকে মাসির বাড়ি (গুন্ডিচা মন্দির) বা শ্রীক্ষেত্র অভিমুখে যাত্রা করেন।

  • ছেঁড়াপহরা: পুরীর ঐতিহ্যবাহী প্রথা অনুসারে, পুরীর রাজা বা তাঁর প্রতিনিধি সোনার ঝাড়ু দিয়ে রথের পথ পরিষ্কার করেন।

  • ভক্তদের অংশগ্রহণ: লক্ষ লক্ষ ভক্ত এই রথের রজ্জু টেনে নিয়ে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।

  • উল্টো রথ: সাত বা নয় দিন পর দেব-দেবী আবার নিজ মন্দিরে ফিরে আসেন, যা উল্টো রথযাত্রা বা বাহুড়া যাত্রা নামে পরিচিত।

  • মেলা ও অন্যান্য আচার: রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বাংলার বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে। এই দিনে নারায়ণ পূজা, গৃহপ্রবেশ, বৃক্ষরোপণ এবং দান-ধ্যান করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।

২০২৬ সালের রথযাত্রার জন্য ভ্রমণের টিপস

২০২৬ সালের রথযাত্রা উপলক্ষে পুরী ভ্রমণের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিচে দেওয়া হলো:

২০২৬ সালের রথযাত্রা ১৬ জুলাই, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটি সাধারণত ৯ দিন ধরে চলে, যা উল্টো রথযাত্রার দিন (বাহুড়া যাত্রা) শেষ হয়।

১. বুকিং এবং পরিকল্পনা (Booking and Planning)

  • আগে থেকে বুকিং: রথযাত্রা পৃথিবীর বৃহত্তম জনসমাবেশগুলির মধ্যে একটি। তাই হোটেল, ট্রেন বা বিমানের টিকিট কমপক্ষে ৬ থেকে ৯ মাস আগে বুক করুন। বিশেষ করে পুরীর আশেপাশে ভালো হোটেল খুব দ্রুত বুক হয়ে যায়।

  • পরিবহণ: পুরী রেলওয়ে স্টেশন (PURI) এবং ভুবনেশ্বর বিমানবন্দর (BBI) হলো প্রধান প্রবেশদ্বার। ভিড় এড়াতে ভুবনেশ্বরে নেমে ট্যাক্সি বা বাসে পুরী পৌঁছানো ভালো। এই সময়ে ট্রেনে ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকে।

  • ভ্রমণের সময়: শুধু রথযাত্রার দিন (জুলাই ১৬) নয়, বাহুড়া যাত্রার দিনও (সাধারণত রথের ৯ দিন পর) একই রকম ভিড় হয়। যদি ভিড় কিছুটা এড়াতে চান, তবে এই দুই দিনের মাঝামাঝি সময়ে (যখন দেবতারা গুন্ডিচা মন্দিরে থাকেন) পুরীতে থাকার পরিকল্পনা করতে পারেন।

২. আবহাওয়া ও স্বাস্থ্য (Weather and Health)

  • বর্ষাকাল: জুলাই মাস ওড়িশাতে বর্ষাকালের শুরু। বৃষ্টি হতে পারে, তাই ছাতা বা রেইনকোট অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।

  • গরমে সতর্কতা: ভিড়ের মধ্যে গরম ও আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে। তাই হালকা, আরামদায়ক পোশাক পরুন।

  • জল ও পানীয়: প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। ডিহাইড্রেশন এড়াতে ORS বা গ্লুকোজযুক্ত পানীয় সঙ্গে রাখুন। রাস্তার খোলা পানীয় বা খাবার এড়িয়ে চলুন।

  • জুতো: ভিড়ের মধ্যে হাঁটার জন্য আরামদায়ক চপ্পল বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন।

৩. ভিড় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা (Crowd Management and Safety)

  • ভিড়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন: রথ টানার সময় লাখ লাখ ভক্তের সমাবেশ ঘটে। এতে প্রচণ্ড ভিড়, ঠেলাঠেলি এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে। মানসিকভাবে এর জন্য প্রস্তুত থাকুন।

  • মূল্যবান জিনিসপত্র: মানিব্যাগ, মোবাইল এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র সাবধানে রাখুন। পকেটমারদের থেকে সতর্ক থাকুন।

  • জরুরী যোগাযোগ: পরিবার বা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখতে একটি নির্ধারিত মিলনস্থান ঠিক করে রাখুন, কারণ ভিড়ের মধ্যে মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকতে পারে। শিশুদের হাতে যোগাযোগের নম্বর লিখে রাখুন।

  • রথের দড়ি টানা: যদি রথের দড়ি টানার ইচ্ছা থাকে, তবে রথের খুব কাছাকাছি যাওয়ার সময় অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন। বয়স্ক ও শিশুদের ভিড়ের মধ্যে নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৪. রথযাত্রা দর্শন (Viewing the Yatra)

  • সেরা স্থান: আপনি যদি নিরাপদে ভিড় এড়িয়ে রথ দেখতে চান, তবে পুরীর বড় রাস্তার (Grand Road) ধারের হোটেল বা লজগুলির ছাদ বা বারান্দায় আগে থেকে জায়গা বুক করুন।

  • সময়সূচী: রথযাত্রা ভোরবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায় (মঙ্গল আরতি, ইত্যাদি)। তবে রথ টানা শুরু হয় দুপুরের দিকে। রথযাত্রার আগের দিন থেকেই রথগুলি বড় রাস্তার উপর তৈরি থাকে, যা সন্ধ্যায় ভালো করে দেখা যায়।

৫. স্থানীয় সংস্কৃতি ও নিয়মাবলী (Local Culture and Etiquette)

  • পোশাক: মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে এবং ভিড়ের মধ্যে শোভন পোশাক পরিধান করা উচিত।

  • ভাষাগত সুবিধা: স্থানীয় ভাষা ওড়িয়া হলেও, হিন্দি ও ইংরেজি সাধারণত চলে। তবে বাঙালি পর্যটকদের জন্য ভাষা তেমন সমস্যা সৃষ্টি করে না।

মোটকথা, সঠিক পরিকল্পনা এবং ধৈর্যের সাথে ভ্রমণ করলে ২০২৬ সালের রথযাত্রা আপনার জীবনে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে।


রথযাত্রা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

রথযাত্রা হিন্দু ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাচীন উৎসব। এর গুরুত্ব বহুবিধ, যার মধ্যে প্রধান কারণগুলি নিচে দেওয়া হলো:

১. ধর্মীয় তাৎপর্য (Religious Significance)

  • ভগবান জগন্নাথের নগর ভ্রমণ: এই উৎসবটি মূলত ভগবান জগন্নাথ (শ্রীকৃষ্ণ), তাঁর দাদা বলরাম এবং বোন সুভদ্রার পুরীর মূল মন্দির থেকে মাসির বাড়ি অর্থাৎ গুন্ডিচা মন্দিরে বা শ্রীক্ষেত্র অভিমুখে যাত্রাকে স্মরণ করে। এটি ভক্তদের বিশ্বাস, ভগবান এই দিন তাঁর ভক্তদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নগর ভ্রমণে বের হন।

  • মোক্ষ লাভের সুযোগ: "রথে তু বামনং দৃষ্টা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে" – এই শাস্ত্রীয় বিশ্বাস অনুসারে, রথে অধিষ্ঠিত ভগবান বামনদেবকে (জগন্নাথ) দর্শন করলে ভক্তের আর পুনর্জন্ম হয় না, অর্থাৎ তিনি মোক্ষ লাভ করেন। রথের দড়ি টানাকে পুণ্য অর্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়।

  • লীলা স্মরণ: এই যাত্রা শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন প্রত্যাবর্তনের স্মৃতি বহন করে। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে রথযাত্রা সেই সময়কে তুলে ধরে যখন দ্বারকা থেকে শ্রীকৃষ্ণ, বলরাম ও সুভদ্রা কুরুক্ষেত্রে এসেছিলেন এবং বৃন্দাবনের গোপীরা তাঁদের দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছিলেন।

২. সাংস্কৃতিক ও সামাজিক তাৎপর্য (Cultural and Social Significance)

  • সাম্য ও ঐক্য: রথযাত্রা হলো একটি সর্বজনীন উৎসব যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষ একত্রিত হয়। পুরীর ঐতিহ্য অনুসারে, সকলে মিলে রথের দড়ি টানার মাধ্যমে সমাজে সাম্য ও ঐক্যের বার্তা দেওয়া হয়।

  • মাসির বাড়ি: গুন্ডিচা মন্দিরকে শ্রীজগন্নাথের মাসির বাড়ি বলা হয়। শাস্ত্রে এই মন্দিরকে "জন্ম বেদী" (জন্মস্থান) বলা হয়েছে। দেবতাদের এই মাসির বাড়ি যাত্রা ভক্ত ও পরিবারের সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরে।

  • ভক্তি ও আবেগ: এই উৎসব ভক্ত ও ভগবানের মধ্যেকার গভীর সম্পর্ক ও ভালোবাসার প্রকাশ। ভক্তরা রথের রজ্জু ধরে টেনে ভগবানের প্রতি তাঁদের অপার ভক্তি নিবেদন করেন।

৩. প্রতীকী তাৎপর্য (Symbolic Significance)

  • দেহ হলো রথ: কাঠোপনিষদের শ্লোকের ভিত্তিতে, হিন্দু দর্শনে মানবদেহকে 'রথ' এবং আত্মাকে 'রথী' বা আরোহী হিসেবে প্রতীকীভাবে ধরা হয়। রথযাত্রা এই দর্শনকেই মূর্ত করে তোলে যে, জীবন হলো একটি যাত্রা যেখানে আত্মাকে এই দেহরূপ রথের মাধ্যমে তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।

  • গতির প্রতীক: রথ 'গতি' এবং 'অগ্রগতির' প্রতীক। এটি মানুষকে জীবনের পরিবর্তনশীল পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে এবং আধ্যাত্মিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করে।

এই সমস্ত কারণগুলির জন্যই রথযাত্রা কেবল একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও চেতনার একটি অপরিহার্য অঙ্গ।

 বিশেষ দিনে বুঝিয়ে দিলেন মহন্ত স্বামী মহারাজ - রথযাত্রা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

মহন্ত স্বামী মহারাজের মতে, রথযাত্রা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এর গভীর আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক গুরুত্ব রয়েছে। তিনি রথযাত্রার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন, তার সারসংক্ষেপ নিচে দেওয়া হলো:


মহন্ত স্বামী মহারাজের দৃষ্টিতে রথযাত্রার গুরুত্ব

১. ঐক্য ও সম্প্রীতির উৎসব

মহন্ত স্বামী মহারাজ রথযাত্রাকে "ঐক্য এবং সম্প্রীতির উৎসব" হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এই উৎসব মানুষকে একত্রিত করে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ ভক্ত রথের রশি ধরে টেনে যে সমবেত শক্তির প্রদর্শন করেন, তা সামাজিক সংহতির এক অনন্য বার্তা বহন করে।

২. বিশেষ আধ্যাত্মিক বার্তা

এই উৎসবের সঙ্গে একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক বার্তা যুক্ত রয়েছে। মহারাজ বলেন, ভারতীয় সংস্কৃতিতে রথযাত্রার বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে কারণ এটি জীবনে ভগবানের কাছে আত্মসমর্পণের শিক্ষা দেয়।

৩. আত্মসমর্পণের শিক্ষা

স্বামী মহারাজ ভক্তদের উপদেশ দেন যে, জীবনের নিয়ন্ত্রণ ভগবানের হাতে সমর্পণ করা উচিত। তিনি মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ঠিক যেমন অর্জুন নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের হাতে সমর্পণ করেছিলেন, ঠিক তেমনই আমাদেরও নিজেদের জীবন ভগবান এবং তাঁর বার্তা প্রেরকের (গুরু) উদ্দেশ্যে নিবেদন করা উচিত।

"আমাদের উচিত নিজের জীবন ভগবান এবং তাঁর বার্তা প্রেরকের হাতে সমর্পণ করে দেওয়া। ঠিক যেমনটা করেছিলেন অর্জুন। নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণের হাতে। তার পরেই জীবনযুদ্ধে জয়লাভ করেন তিনি।"

৪. সুখে-সমৃদ্ধির পথ

আত্মসমর্পণের এই পথেই জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আসে। মহারাজ বলেন, যখন আমরা নিজেদের জীবন ভগবানের উদ্দেশ্যে সমর্পণ করি, তখন ভগবান নিজেই আমাদের সুখ-দুঃখ, পার্থিব এবং অপার্থিব চাহিদার খেয়াল রাখেন এবং যা প্রয়োজন তা তিনি নিজেই মিটিয়ে দেন।

সংক্ষেপে, মহন্ত স্বামী মহারাজের মতে, রথযাত্রা হলো সম্মিলিত ভক্তি এবং ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণের প্রতীক। এটি একটি উৎসব যা কেবল আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য নয়, বরং আধ্যাত্মিক জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url