রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংক্ষিপ্ত জীবনী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন কাহিনী

তিনি যেমন ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি তেমনি ছিলেন উপন্যাসিক সংগীতস্রষ্টা নাট্যকার চিত্রকার ছোট গল্পকার প্রাবন্ধিক অভিনেতা কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বলে মনে করা হয় তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় এবং প্রথম এশিয়ান জিনিস সাহিত্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পান .

কবিগুরু তথা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকুলের মধ্যে ছিল 52 টি কাব্যগ্রন্থ 38 টি নাটক 13 টি উপন্যাস 95 টি ছোটগল্প 1915 বিজ্ঞান এবং 36t প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্য সংকলন এই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুটি গান বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন যার প্রতিবাদ সৃষ্টি সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবেনা .

কোন কাহিনী সম্পর্কে চলুন আর সময় নষ্ট না করে জানাজাত কবিগুরুর জীবন কাহিনী সম্পর্কে ইংরেজি মে 1861 সাল এবং 1268 বঙ্গাব্দের 25 শে বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের তার জন্ম তিনি ছিলেন বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতা সারোদা সুন্দরী দেবী 14 তম সন্তান ছোটবেলা থেকেই স্কুলে চার দেওয়ালের মাঝে পড়াশোনার একেবারেই অপছন্দের ছিল ছোটবেলাতে কবিগুরুকে কলকাতার ওরিয়েন্টাল সেমিনারি নর্মাল স্কুল একাডেমি এবং সেন্ট জেভিয়ার'স কলেজিয়েট স্কুলের মত চারটি আলাদা আলাদা স্কুলে ভর্তি করানো হয় কিন্তু কোনটাই তার পছন্দের ছিল না তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাড়িতে গৃহশিক্ষক রেখেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করেন ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আবৃত্তি নাটক সাহিত্য প্রকৃতির প্রতি প্রবলভাবে আকর্ষণ জন্মায় এবং মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন .

 274 সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রথম অভিলাষ কবিতাটি প্রকাশিত হয় এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা হাজার 875 যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাত্র 14 বছর বয়স তখন তার মা মারা যান যেহেতু পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নেশায় বেশিরভাগ সময় কলকাতার বাইরে থাকতেন তাই রবি ঠাকুরের ছোটবেলাকার বাড়ির চাকর বাকরদের সাল 877 তিনি ভিখারিনী নামে বাংলা সাহিত্যের প্রথম ছোটগল্প লেখেন এবং হাজার 878 সালে প্রকাশিত হয় রবি ঠাকুরের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কথা প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ কবিকাহিনী 878 ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে রবি ঠাকুরকে ইংল্যান্ডে পাঠানো হয় প্রথমে তিনি একটি পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং পরে 1889 সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের আইনবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন কিন্তু এই আইন নিয়ে পড়াশোনা তে তার কোন ইচ্ছা ছিল না.

 তিনি সব সময় সাহিত্য চর্চা নিয়ে বেঁচে থাকতেন ইংল্যান্ডে থাকাকালীন শেক্সপিয়ার ও অন্যান্য ইংলিশ সাহিত্যিকদের রচনা সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিচয় ঘটে এবং তাদের লেখাগুলি তিনি গভীর মনোযোগ সহকারে পাঠ করতেন হাজার 880 প্রায় দেড় বছরে ইংল্যান্ডে কাটিয়ে কোন ডিগ্রী না নিয়ে এবং ব্যারিস্টারি পড়া শেষ না করেই তিনি দেশে ফিরে আসেন ইংল্যান্ডে থাকাকালীন ইংল্যান্ড বসবাসের অভিজ্ঞতার কথা ভারতীয় পত্রিকায় পত্রাকারে পাঠাতেন তিনি 1881 সালে এই পত্রাবলী প্রবাসীপত্র নামে ছাপা হয় আর এটিই ছিল রবি ঠাকুরের প্রথম চলিত ভাষায় লেখা গদ্য গ্রন্থ 1883 9 ডিসেম্বর বাংলায় 1290 বঙ্গাব্দ 24 অগ্রহায়ন ঠাকুরবাড়ির একজন কর্মচারী বেনীমাধব রায়চৌধুরী কন্যা ভবতারিণীর সঙ্গে রবি ঠাকুরের বিবাহ সম্পন্ন হয় বিবাহিত জীবনের এই ভবতারিণী দেবী নামকরণ হয়েছিল মৃণালিনী. 

 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঁচটি সন্তানের জন্ম নেন যারা ছিলেন মাধুরীলতা রথীন্দ্রনাথ রেনুকা এবং শমীন্দ্রনাথ এদের মধ্যে অতি অল্প বয়সী রেনুকা ও শমীন্দ্রনাথ মারা যান 890 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আরেক বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় এই কুড়ি থেকে ত্রিশ বছরের মধ্যে তারা আরো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ও গীত সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল সেগুলি হলো প্রভাত সঙ্গীত সঙ্গীত রবিচ্ছায়া কুড়ি ও কোমল 891 পিতার আদেশে তিনি নদীয়ার পাবনা ও রাজশাহী জেলা এবং উড়িষ্যা জমিদারি দেখাশোনার শুরু করেন 891 সাল থেকে 895 সাল পর্যন্ত নিজের সম্পাদিত সাধনা পত্রিকায় রবি ঠাকুরের বেশকিছু উৎকৃষ্ট রচনা প্রকাশিত হয় তাঁর সাহিত্য জীবনের এই পর্যায়ে সাধনা পর্যায় নামে পরিচিত হাজার 900 এক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর. 

সপরিবারে বীরভূম জেলার বোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তিনিকেতনে চলে আসেন এখানে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 1888 সালে একটি আশ্রম এবং 1891 সালে একটি ব্রহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই আশ্রমের বাগানে একটি গ্রন্থাগার নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চালু করলেন ব্রহ্মবিদ্যালয় নামে একটি পরীক্ষামূলক স্কুল এরপর রবি ঠাকুরের জীবনের শুরু হয় একটি দুঃখ কষ্ট ভরা বেদনা দায়ক অধ্যায়ঃ উনিশ সালের 23 শে সেপ্টেম্বর মাত্র 30 বছর বয়সে কবিপত্নী মৃণালিনী দেবী মারা যান এরপর 930 হাজার 900 সেপ্টেম্বর কন্যা রেনুকা হাজার 905 সালে হাজার 900 জানুয়ারি পিঠা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও 907 সালে 23 শে নভেম্বর কনিষ্ঠপুত্র শমীন্দ্রনাথ মারা যান এসবের মধ্যেই হাজার 905 সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী স্বদেশী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন হাজার 906 1907 সালে যথাক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

  জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় কে কৃষি বিজ্ঞান শেখানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঠান এই সময় শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্য সংকট তীব্র হয়ে ওঠে পাশাপাশি পুত্র ও জামাতের বিদেশে পড়াশোনার ব্যয়ভারও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে বহন করতে হতো তাই এসব ঘর সামলাতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্ত্রীর গয়না ও বসতবাড়িতে বিক্রি করে দেন ইতিমধ্যে ও বহির্বঙ্গের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা টি ছড়িয়ে পড়ে হাজার 1901 সালের নৈবেদ্য 1906 সালে খেয়া কাব্যগ্রন্থ 1910 সালে তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি প্রকাশিত হয় হাজার 913 গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য সুইডিশ একাডেমি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করেন এবং হাজার 900 15 সালের ব্রিটিশ সরকার তাকে শেয়ার বা নাইটহুড উপাধি দেন 1919 জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে. এই নাইটহুড উপাধি বর্জন করেন ।

 1921 কবিগুরু এবং আরো কয়েকটি ব্যক্তি মিলে শান্তিনিকেতনের আদর্শ গ্রামে পল্লী সংগঠন কেন্দ্র নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন এই সংস্থার উদ্দেশ্য ছিল কৃষি উন্নতিসাধন ম্যালেরিয়া ইত্যাদি রোগ নিবারণ চিকিৎসার সুব্যবস্থা এবং সাধারণ গ্রামবাসীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা হাজার 930 সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই সংস্থার নাম পরিবর্তন করে রাখেন শ্রীনিকেতন জীবনের শেষ দশক রবীন্দ্রনাথের মোট 50 টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় । এই সময়কার কাব্য গ্রন্থের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল পুনশ্চ শেষ সপ্তক শ্যামলী এবং পত্রপুট জীবনের এই পর্বে সাহিত্যের নানা শাখায় পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই পরীক্ষা নিরীক্ষার ফসল হলো তার একাধিক গদ্য গীতিকার নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা এছাড়া রবীন্দ্রনাথ আরো তিনটি উপন্যাস মালঞ্চ অধ্যায় এই পর্বে রচনা করেছিলেন তারা অধিকাংশই ছবি জীবনের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের শেষ বছর গুলিতে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন ।

হাজার 1937 সালে প্রকাশিত বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ সংকলন বিশ্বপরিচয় জীবনের শেষ চার বছর ছিল তার ধারাবাহিক শারীরিক অসুস্থতার সময় এই সময়ের মধ্যে অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় সূর্যসেন থাকতে হয়েছিল তাকে হাজার 1937 সালে একবার চৈতন্য হারিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছিল কবিগুরুর সেবার সেরে উঠলেও  1940 সালে অসুস্থ হওয়ার পর 38 সেরে উঠতে পারেননি দীর্ঘ রোগভোগের পর হাজার 1941 সালে জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মার বিশ্বভুবনে বেরিয়েছিলেন 1878 থেকে 1932 সালের মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশের 30 টির বেশী দেশ ভ্রমণ করে ইংল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে রাশিয়া । জাপান চীন পেরু জার্মানি আর্জেন্টিনা মেক্সিকো গ্রিস তুরস্ক মিশর প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করে ভারতে ফিরে আসেন । তিনি মাত্র আট বছর থেকে তাঁর লেখা শুরু আর মারা যাওয়ার 7 দিন আগে পর্যন্ত তিনি রচনা করে গেলেন কিছু অমর সৃষ্টি চিরজীবন বাঙালি তথা বিশ্ববাসীর হিরোইন অমর হয়ে থাকবে ।