বিরসা মুন্ডা কে ছিলেন এবং বিরসা মুন্ডা দিবস কেন পালন করা হয় ?

 বিরসা মুন্ডা কে ছিলেন এবং বিরসা মুন্ডা দিবস কেন পালন করা হয় ?




 মুন্ডা আন্দোলন বা মুন্ডা বিদ্রোহ ভারতবর্ষে আঠারোশো সাতান্ন থেকে 1919 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অনেকগুলি আদিবাসী আন্দোলন ঘটেছিল মুন্ডা আন্দোলন তাদের মধ্যে একটি মুন্ডা বিদ্রোহ সম্পর্কে .

ভারতবর্ষের কয়েকটি আদি আদিবাসী উপজাতি সমষ্টির সাধারণ নাম হল মুন্ডা আবারও বলছি ভারতবর্ষের কয়েকটি আদিম আদিবাসী উপজাতি সমষ্টির সাধারণ নাম মুন্ডা আদিবাসী উপজাতি হলো সাঁতার ভূমিযো কোন হো ইত্যাদি এদের ভাষা হল সাঁওতালি মুন্ডারি ক কোদা চড়ি ধরিয়া প্রভৃতি পরস্পর পরস্পরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত এদের বসবাস কোথায় ছিল এরা মধু এবং পূর্ব ভারতের নানা স্থানে বিহারের জাতিসংঘের ছোটনাগপুর উপত্যাকায় এবং সংলগ্ন মধ্যপ্রদেশ উড়িষ্যা এবং বাংলা অঞ্চলে বসবাস করে.

1899 থেকে হাজার 1900 খ্রিস্টাব্দে জাতীয় অঞ্চলে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে একটা ব্যাপক আদিবাসী আন্দোলন সংগঠিত হয় যেটি বিরাট বিশৃঙ্খলা বা উলগুলান নামে পরিচিত আবারো বলছি যে আন্দোলনটি বিরাট বিশৃংখলা বা ভয়ঙ্কর বিশৃংখলা অথবা উলঘুলান উলগুলান নামে পরিচিত.

মুন্ডাদের পরিচয় তাদের বাসভূমি সম্পর্কে আমাদের জানা হয়ে গেল এখন জেনে নেওয়া যাক মুন্ডা বিদ্রোহের পেছনে কী কারণ ছিল বন্ধুরা মুন্ডা বিদ্রোহের পেছনে একটি নয় একাধিক কারণ ছিল সে কারণগুলি আমি পরপর বলছি.

মুন্ডাদের কৃষি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ছিল খুৎকাঠি প্রথা বা জমির যৌথ মালিকানা আবারো বলছে মুন্ডাদের কৃষি ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য ছিল খুৎকাঠি প্রথা বা জমির যৌথ মালিকানা.

মুন্ডারা যুগ যুগ ধরে জমিতে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে চাষাবাদ করত কিন্তু ব্রিটিশ শাসনের শুরু হলে ব্রিটিশ শাসন যখন শুরু হয় তখন তাদের এই চাষের প্রথায় বিচ্ছেদ ঘটে তাদের জমি জায়গা গুলো ক্রমেই উত্তর ভারত থেকে আসা জায়গীরদার ঠিকাদার বণিক এবং মহাজনদের দখলে চলে যায় সেইসঙ্গে এই অর্জনে মুন্ডাস শ্রমিক সংগ্রহ করার ব্যাপারে ঠিকাদারদের অত্যাচার শুরু হয়.

মুন্ডাদের নিজস্ব চিরাচরিত আইন তাদের চিরাচরিত বিচারব্যবস্থা তাদের সামাজিক ব্যাধি তাদের নিজস্ব এই সমস্ত কিছু বাতিল করে নতুন আইন কানুন প্রবর্তন করা হয় তাদের জন্য এবং এই সময়ের নগদে খাজনা দেওয়ার রীতি চালু হয় এবং তারা যদি খাজনা দিতে না পারো তাহলে তাদের জমি থেকে উৎখাত করে দাওতো জমিদার এবং মহাজনেরা তাদের ওপর নানা ধরনের এবং বিশাল পরিমাণে করের বোঝা চাপাতে শুরু করে সেইসঙ্গে ছিল বেজ্ঞারি প্রথা অর্থাৎ বিনা মজুরিতে মুন্ডাদের নানা ধরনের কাজ করতে বাধ্য করা হতো.

আরো ছিল সেটা হল নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে স্বল্প মজুরির বিনিময়ে মুরাদের আসামের চা বাগানের শ্রমিকের কাজের কাছে পাঠানো হতো সেখানে মুরাদের ওপর মালিকেরা চা বাগানের মালিকের অকথ্য অত্যাচার করত এবং তারা ছিল অত্যাচার ও শোষণের শিকার আমি গ্রামে মদের দোকান খুলতে শুরু করে এবং গুন্ডাদের নেশায় আসক্ত করে দেয় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এবং দেনার দায়ে যারা তাদের জমি জায়গা এদেরকে লিখে দেয় এটা একটা কারণ ছিল এছাড়া আরও একটি কারণ হলো.

খ্রিস্টান পাদ্রীরা সেই সময় গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করে মুন্ডাদের নানা রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে তাদের উদ্দেশ্য ছিল সহানুভূতি প্রদর্শন করে সহানুভূতি দেখিয়ে তাদের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করা এর ফলে কি হলো মুন্ডাদের চিরাচরিত ধর্ম এবং ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে তাদের নানা রকমভাবে পাদ্রীরা প্রচার করতে থাকলো ফলাফল দেখাতে থাকল এবং শেষপর্যন্ত জমি সংক্রান্ত যে সকল সমস্যার মূল কারণ ছিল সে সকল সমস্যার সমাধান হয়নি সেটা অমীমাংসিত থেকে যায় আঠারোশো নব্বইয়ের দশকে মুন্ডার সরদাররা আদালতে এই পরদেশী জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে.

এবং এটা ছাড়াও তারা খ্রিস্টান পাদ্রীদের কাছেও এই শোষনের বিরুদ্ধে আবেদন জানায় কিন্তু কোনো পক্ষই তাদের অভিযোগ কেন তারা অভিযোগ করছে তাদের ওপর কি শোষণ হচ্ছে অত্যাচার হচ্ছে সে ব্যাপারে দেখার জন্য কেউই ছিল না ফলে তারা বাধ্য হয়ে বিদ্রোহের পথ বেঁচে ছিল.

এই সময়ে মুন্ডাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে বিরসা মুন্ডা নামে এক নেতার আবির্ভাব হয় তাদের বিরুদ্ধে এই অনাচার অত্যাচার ছিল তার বিরুদ্ধে তারা বহু আগে থেকেই ধীরে ধীরে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছিল এ ব্যাপারে আবেদন করেছিল সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল এমনকি মহারানী ভিক্টোরিয়ার কাছেও তারা আরজি জানিয়েছিল যে তাদের বিরুদ্ধে যে অত্যাচার অনাচার শাসন চলছে সেগুলো বন্ধ করার জন্য 1881 খ্রিস্টাব্দের 14 হাজার মুন্ডা এক আবেদনপত্র জানিয়েছিল জমিদার এবং ছোটনাগপুরের রাজার সঙ্গে তাদের কোনো রকম সম্পর্ক নেই তারাই হল জমির প্রকৃত মালিক জমিদারের অন্যায় ভাবে তাদের জমি দখল করছে তাদেরকে জমি থেকে উৎখাত করছে 1889 খ্রিস্টাব্দে আরেকটি আবেদনপত্রে মূলধারা বলেছিল যে সমস্ত ছোটনাগপুর হল মুদ্রা জাতির নিজস্ব এলাকা.

হাসিনা কা সরকারি কোনো আইন তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারে না এসব আবেদন বাড়িতে কোন কাজ হয়নি শেষ পর্যন্ত বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে তারা এক স্বাধীন ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী হয় সময়টা ছিল 1875 খ্রিস্টাব্দে মতান্তরে 1874 খ্রিস্টাব্দ গ্রামে একটা সপরিবারে বিরসা  জন্ম হয় সীমাহীন দারিদ্র্যের মধ্যে তার শৈশব অতিবাহিত হয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষা সমাপ্ত করেছিলেন এবং 10-12 বছর বয়সে তিনি চাইবাসার জার্মান মিশনারি পরিচালিত আপার প্রাইমারি বিদ্যালয় ভর্তি হয়েছিলেন তিনি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন কিন্তু অচিরেই এই মিশনারীদের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য দেখা দেয় এবং তাকে মিশন থেকে বহিস্কৃত করা হয় তারপর তিনি খ্রিস্ট ধর্ম ত্যাগ করেন এবং নিজের ধর্মে ফিরে আসেন 1895 খ্রিস্টাব্দে মাত্র 21 বছর বয়সে তিনি ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ পেয়েছেন বলে দাবি করেন.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url