নরোত্তম দাস ঠাকুর কে ছিলেন এবং তার জীবন কাহিনী Narottam Das Thakur Life Story
নরোত্তম দাস ঠাকুর কে ছিলেন এবং তার জীবন কাহিনী Narottam Das Thakur Life Story
নরোত্তম দাসের জীবনী তো চলুন শুরু করা যাক নরোত্তম দাস ঠাকুর ছেলে রাধাকৃষ্ণ নন্দনতত্ত্ব ও নারায়ন দেবের পত্র এবং তিনি মোঘল সাম্রাজ্যের তথা বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গোপালপুর বরগুনায় বেড়ে ওঠেন 1531 বাংলাতে মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে বর্তমানে খেতুরী ধামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি তার পিতাও বিশাল ভূসম্পত্তির মালিক ছিলেন কিন্তু বিচারের বিশাল সম্পদের প্রতি তার বিন্দুমাত্র লোক ছিল না তার পিতাও যাতে কায়স্থ ছিলেন সেই হিসেবে তিনি কারো সন্তান ছিলেন মাত্র 16 বছর বয়সে পিতার সম্পত্তি ত্যাগ করে তিনি বৃন্দাবনে চলে যান তার পিতার ইচ্ছা ছিল নরোত্তম দাস সংসারী হয়ে.
যাপন করবে কিন্তু সংসারের প্রতি বিন্দুমাত্র টান ছিল না তার বাল্যকালের কিছু সময় নিজ গ্রাম গোপালপুর অতিবাহিত করার পর বৈষ্ণব মন্ত্রে দীক্ষা লাভ করার জন্য ভারতের অন্যতম তীর্থস্থান বৃন্দাবনে গমন করেন নরোত্তম দাস ঠাকুর এবং বৈষ্ণব কুল শিরোমনি লোকজনের নিকট বৈষ্ণব মন্ত্রী দীক্ষা লাভ করেন প্রেমবিলাস শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত গ্রন্থে উল্লেখ আছে নরত্তম দশদিক খারাপ করার জন্য লোকনাথ গোস্বামী নিকট উপস্থিত হন এবং দীক্ষা লাভ করার প্রার্থনা জানান কিন্তু লোকনাথ গোস্বামী তাকে নিরাশ করেন এবং বলেন আমি শিষ্য গ্রহণ করব না এই বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ গুরুর বাণী শুনে নরোত্তম দাস হতাশ হয়ে পড়েন কিন্তু হাল ছাড়লেন না নরোত্তম দাস ভাবলেন যে কোন উপায়েই হোক তাকে দেখা করতে হবে প্রতিদিন.
প্রাতঃকালে লোকনাথ গোস্বামী মল ত্যাগ করতেন কিন্তু পরের দিন সকালে তার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না লোকনাথ গোস্বামী মনে প্রশ্নের উদয় হলো কে তার এই বিশ টা পরিষ্কার করি যে আমার এ বিষয়ে পরিষ্কার করে সে অবশ্যই আমার পরম ভক্ত তাকে অবলোকন করতে হবে একদিন প্রাতঃকালে মলত্যাগ করে আসলেন এবং নজরে রাখলেন তারপর আসেন উনি এখানে পড়ে দেখলেন সে আর কেউ নয় তিনি হলেন নরত্তম রায় ঠাকুর লোকনাথ তাকে বুকে টেনে নিলেন এবং বললেন তুই আমার পরম ভক্ত হওয়ার যোগ্য এই বলে তিনি নরোত্তম দাস কে শীর্ষ করে নিয়েছিলেন এই ধরাধামে লোকনাথ গোস্বামীর একজন শিষ্য ছিলেন তিনি হলেন নরোত্তম দাস ঠাকুর নরোত্তম দাস ঠাকুর সনাতন হিন্দু মুসলিম ধর্ম প্রচার করতেন এবং সমাজে সম অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মানব সেবার কাজ করতেন তিনি বাল্যকাল থেকেই ধর্ম
সংসার বৈরাগী ও উদাসীন প্রকৃতির লোক ছিলেন নরোত্তম দাস ঠাকুর কে স্মরণ করতে গোদাগাড়ীর ঐতিহ্যমন্ডিত গৌরাঙ্গ বাড়িতে প্রতি বছর পালিত হয় তিরোভাব তিথি এ অনুষ্ঠানে লাখ লাখ নরত্তম ভক্তের সমাগম ঘটে ইতিহাসে পাওয়া যায় লালন শাহ নরত্তম দাসের তিরোভাব তিথি তে যোগ দিয়েছিলেন নরোত্তম দাসের অনুসারী ছিলেন মহাত্মা গান্ধী ও কিন্তু তিনি কখনও গৌরাঙ্গ বাড়িতে আসেননি বৈষ্ণব ধর্ম পালন করে গেছেন মহাত্মা গান্ধী দ্বিতীয় প্রধান অবদান বৈষ্ণব সমাজ পদাবলী কীর্তন লীলা সংকীর্তন এর প্রবর্তন বাংলা সংগীতের ইতিহাসে পদাবলী কীর্তন প্রায় চারশত বছর ধরে জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে এবং শুধু বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের নয় বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের সর্বত্রই জাতি নির্বিশেষে এর অবদান রয়েছে আর সেজন্যই এর ওষুধ.
গানের প্রবর্তক নরোত্তম দাস বিপর্যয়ের অধিকারী হয়েছেন তিনি নিজেও সুকণ্ঠ গায়ক ছিলেন একবার এক ব্যক্তি নির্দোষ ব্রাহ্মণ বালক কে হত্যা করে বায়ু রোগ গ্রস্থ হয়ে পড়েন এবং তার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে নরোত্তম দাস ঠাকুরের শরণাপন্ন হয়ে তিনি আরোগ্য লাভ করেন পরে তিনি এবং তার সঙ্গ পণ্য মিলে নরোত্তম দাসের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন নরোত্তম দাস কে বৈষ্ণবেরা এক বিশাল সমাবেশে খাঁটি ব্রাহ্মণ বলে ঘোষণা দিয়েছিল এই অবস্থায় ব্রাহ্মণ সমাজের প্রতি সকল সীমা অতিক্রম করে নরত্তম কে উচিত শিক্ষা দেওয়ার ফন্দি আঁটতে লাগলো পল্লী রানী সিংহ রায় একজন গোঁড়া ব্রাহ্মণ ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিনিধিগণ এ রাজা শরণাপন্ন হয়ে রাজার সাহায্য প্রার্থনা করেন যাতে নরত্তম কে ব্রাহ্মণ শীর্ষ গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখা যায় তারা সেরা ব্রাহ্মণ.
পন্ডিত পাঠিয়ে নরত্তম কে তর্কযুদ্ধ হারিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করার ফন্দি করলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত নরোত্তম দাসের শীর্ষ গঙ্গানারায়ণ চক্রবর্তী এবং সুহৃদ রামচন্দ্র কবিরাজ ও তার সহোদর কবি চূড়ামণি গোবিন্দদাসের বুদ্ধি চাতুর্যের প্রতিপক্ষের সকল চেষ্টা ব্যর্থ দায় পর্যবসিত হয় শেষ পর্যন্ত রাজেন্দ্র সিংহ রায় সহ সকল পন্ডিত মন্ডলীর অন্যতম শীর্ষ গ্রহণ করে 911 খ্রিস্টাব্দে প্রেমতলী খেতুরধাম মৃত্যুবরণ করেন ভক্তদের নাম প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী প্রেম ভক্ত নরোত্তম দাসের তিরোভাব মহোৎসব শুরু হয় বৈষ্ণব ধর্মে বিশ্বাসী দেশ-বিদেশের সন্ন্যাস ভক্তদের পড়াশোনার অষ্টপ্রহর কীর্তন ও প্রসাদ গ্রহণ মুখরিত হয় এই মেলা প্রাঙ্গণ বাংলা কার্তিক মাসের প্রথম দিনের শুরু হয় 3 তারিখ.
ভক্তদের গঙ্গা স্নানের পর দীর্ঘ প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই মেলা মেলা মূলত সন্ন্যাসীদের মেলা অহিংসা ও মান প্রেমে বিশ্বাসী অন্য ধর্মের অনুসারীরা আসেন এই মেলায় ভারতের নবদ্বীপ ধাম থেকে কয়েক শো সন্ন্যাসীর মেলায় আসেন আসামের কামাখ্যা থেকেও বেশ কয়েকজন সাধু আসেন এখানে নেপাল ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকেও বেশ কিছু ভক্ত আসেন রাজশাহী মহানগরী থেকে 17 কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর তীরে মেলা প্রাঙ্গণে বসে দেশীয় কারো সহ বিভিন্ন পণ্যের শত শত দোকান দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্ত সন্ন্যাসীদের আগমনে মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণে অষ্টপ্রহর কীর্তন ও অহিংসার বাণী প্রচার করা হয় বিরতিহীনভাবে এটি ভারতীয় উপমহাদেশের শত শত বছরের প্রাচীন ধর্মীয় মেলা ধর্মীয় আচার এ এটিকে বৈষ্ণব মেলানো বলা হয়.
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url