Financial Tips: ২০২৩ ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থা কিভাবে প্ল্যানিং করবেন?

 Financial Tips: ২০২৩ ফ্যামিলির আর্থিক অবস্থা কিভাবে প্ল্যানিং করবেন?



করোনা পেরিয়ে পার্টি-পিকনিক, নতুন গুড়, কেক-পেস্ট্রির নতুন বছর দেখব আমরা। প্রায় তিন বছর পরে কোনও বিধিনিষেধ ছাড়া বড়দিন-নববর্ষের আনন্দে মাতব আমরা। কিন্তু সেই মাত্রাছাড়া আনন্দে মেতে সঞ্চয়ের লক্ষ্য থেকে সরলে চলবে না। যে কারণে আয়, খরচ, লগ্নি, সঞ্চয়, করা বাঁচানো ইত্যাদি ক্ষেত্রে সারা বছরের কর্মসূচি গোড়াতেই করে ফেলতে পারলে ভাল।

অ্যাকাউন্ট সামলান:

আজকাল যে কোনও আর্থিক পরিকল্পনা করতেই প্রথম যে বিষয়টি জরুরি, তা হল সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এ জন্য যা করতে হবে-

• অ্যাকাউন্টে নো ইয়োর কাস্টমার (কেওয়াইসি) সংক্রান্ত কাগজ ঠিকঠাক রয়েছে কি না, দেখে নিন

• যে সমস্ত অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয় না, সেগুলি বন্ধ করুন।

• সেভিংসে যতটুকু দরকার, তত টাকাই রাখুন। তার বেশি বেশি সুদ বা রিটার্নের কোনও প্রকল্পে সরান।

• অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে মাঝেমধ্যে বদলাতে হবে নেট ব্যাঙ্কিং, ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড।

স্থায়ী আমানত:

সাধারণ মানুষ, বিশেষত প্রবীণদের ক্ষেত্রে এখনও স্থায়ী আমানত থেকে সুদ অন্যতম আয়ের সূত্র। তাই এই প্রকল্পে কী চলছে, সুদ কী রকম তা জেনে রাখা উচিত। আর নিজের সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে দেখুন-

• পরের বছর কোনও আমানত কবে শেষ হচ্ছে। খাতায় লিখে রাখতে পারেন।

• কোনও ব্যাঙ্কে কোনও মেয়াদে বেশি সুদ মিলছে কি না দেখুন। প্রয়োজনে যে আমানত শেষ হচ্ছে, সেগুলি ওই অন্য ব্যাঙ্কে সরাতে পারেন। চাইলে টাকা রাখতে পারেন বন্ডেও। অথবা ঝুঁকি নিতে চাইলে রয়েছে মিউচুয়াল ফান্ডও।

• প্রবীনেরা বাছতে পারেন সিনিয়র সিটিজেন্স সেভিংস স্কিম, বয়ো বন্দনা যোজনা বা সরকারি বন্ডকে।

বিমা:

জীবন, স্বাস্থ্য, গাড়ি, বাড়ি বিমার মতো বছরে একাধিক বিমার প্রিমিয়াম দিতে হয় আমাদের। কখনও আবার একাধিকবার। ফলে খেয়াল রাখুন-

• কোন বিমায় কবে প্রিমিয়াম দিতে হবে।

• কত টাকা দিতে হবে।

• যে সময়ে প্রিমিয়াম দিতে হবে, সেই সময়ে গিয়ে ওই টাকা অ্যাকাউন্টে থাকছে কি না।

ফান্ড-শেয়ারে লগ্নি গত কয়েক বছরে বেড়েছে শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির আগ্রহ। ফলে এতে পা রাখার আগে
সেগুলির বিষয়ে জেনে রাখুন। এ জন্য-

• যাঁরা নতুন বছরে ফান্ডে প্রথম লগ্নি করার কথা ভাবছেন, তাঁরা চড়া বাজারে একলপ্তে লগ্নি না করে সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানের (এসআইপি) কথা ভাবুন।

• বছরের শুরুতেই নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি করে এসআইপি খোলার কথা ভাবতে পারেন।

• কোনও ফান্ড ভাল না-করলে, সেখান থেকে লগ্নি সরানোর কথাও ভাবতে হবে। ইতিমধ্যেই শেয়ারে পা রেখে থাকলে চড়া
বাজারের সুযোগ নিয়ে বিক্রি করতে পারেন খারাপ রিটার্ন দেওয়া শেয়ারগুলি।

• বাজার বুঝে এবং কিছুটা পড়াশোনা করে সংস্থা বাছুন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

কর বাঁচান:

• অর্থবর্ষের আর তিন মাস বাকি রয়েছে। দেখুন কোনও প্রকল্পে টাকা রেখে একটু বেশি টাকা রেখে কর বাঁচানো সম্ভব কি না।

• যে সমস্ত কর সাশ্রয় প্রকল্পে ইতিমধ্যেই লগ্নি করেছেন, সেগুলিতে ঠিকমতো টাকা জমা পড়ছে কি না দেখুন। পরিবারকে জানান সাধারণত আমাদের পরিবারে মূলত ছেলেরাই টাকা-পয়সা, বিশেষ করে লগ্নির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। ফলে এই ব্যাপারে পরিবারের অন্যরা বেশ পিছিয়ে থাকেন। কিন্তু পরিবারের কর্তা হঠাৎ অসুস্থ হলে সমস্যায় পড়বেন বাকিরা। তাই পরিবারর মধ্যে অন্তত একজনকে টাকাপয়সার বিষয়টি জানিয়ে রাখুন।

কাগজ গোছান:

শুধু লগ্নি ছড়ালেই চলবে না। গুছিয়ে একটি ডায়রিতে লিখে রাখতে হবে অর্থ এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত সব তথ্য। এর মধ্যে থাকবে-

• ব্যাঙ্ক-ডাকঘর সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড, বিমা পলিসি, শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড, ডাকঘর স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প ইত্যাদিতে লগ্নির সব তথ্য। অর্থাৎ, অ্যাকাউন্ট নম্বর, কত টাকা রাখছেন, মেয়াদ কত দিনের, কবে ভাঙানো, নমিনির নাম ইত্যাদি।

• ব্যাঙ্ক লকার ও তাতে রাখা মূল্যবান দ্রব্যের তালিকা, বাড়ির দলিলের হদিশ ইত্যাদি।

• প্রতি তিন মাস অন্তর তথ্য খতিয়ে দেখুন। কোনও কিছু পাল্টালে তা লিখে রাখুন।

• তথ্য লেখার পাশাপাশি ওই সব লগ্নির সঙ্গে যুক্ত থাকা কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন।

• উত্তরাধিকারী বা নিকটতম আত্মীয়কে জানিয়ে রাখুন এই ডায়েরি ও ফাইলের বিষয়টি।

শেষপাত:

আমরা অনেকেই ভাবি, বছর তো সবে শুরু হল। আর কিছু দিন দেখি কী হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সেই ‘কাল’ আর আসে না! উল্টে দিন গড়িয়ে বছর পার হয়ে যায়। তাই কালের জন্য অপেক্ষা নয়। যা করার আজই করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url