Properties of Nalen jaggery: নলেন গুড়ের গুণাগুণ তবে শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও রাজা নলেন গুড়
নলেন গুড়ের গুণাগুণ তবে শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও রাজা নলেন গুড়
নলেন গুড়ের গুণাগুণ:
নলেন গুড় ছাড়া বাঙালির শীতকাল ভাবাই যায় না। তবে শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও রাজা নলেন গুড়। গুড়ের নানা গুণ নিয়ে রইল প্রতিবেদন।
বাঙালির শীতকাল কি আর নলেন গুড় ছাড়া জমে? রসগোল্লা, পায়েস, সন্দেশ বা পিঠে, সবেতেই চাই গুড়ের মিষ্টি মৌতাত। গুড় খেলেই যে মনটা ভাল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, গুড় কিন্তু পুষ্টিগুণেও ভরপুর। জেনে নিন কীভাবে স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে গুড়।
গুড়ে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য তো বটেই, এমনকী ত্বকের জন্যও গুড় বিশেষভাবে উপকারী। এটি ব্রণ, দাগছোপ সরিয়ে দেয়, ত্বকে সহজে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না।
নলেন গুড়ে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হজম করার ক্ষমতা বাড়িয়ে পেট পরিষ্কার রাখে, পাকস্থলীতে এনজ়াইম সিক্রিশন বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য বা গ্যাস-অম্বলের সময়ে দারুণ ভাল কাজ করে নলেন গুড়। নিয়মিত রুটির সঙ্গে গুড় খেলে তাই পাকযন্ত্র ভাল থাকে। গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফোলেট। রোজ গুড় খেলে বা খাবারের সঙ্গে মেশালে শরীরে আয়রনের ঘাটতি মেটে। রেড ব্লাড সেলের মাত্রা ও রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। রক্তাল্পতায় ভুগলে বা শরীরে আয়রনের অভাব হলে তাই শীতকালে রোজ গুড় খান। রক্ত পরিষ্কার করতেও কিন্তু গুড়ের জুড়ি মেলা ভার। গুড় রক্তে হেমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গুড় বিশেষভাবে উপকারী। মেনস্ট্রুয়াল প্রবলেম থেকে পেটে ব্যথা হলে বা ক্র্যাম্প ধরলে চট করে একটু গুড় খেয়ে নিন। এতে খুব ভাল কাজ হবে।
শরীর থেকে টক্সিন দূর করার ক্ষেত্রেও খুব কার্যকরী নলেন গুড়। রোজ এক টুকরো খেলেই উপকার পাবেন। ফুসফুস, লিভার, পাকস্থলী ও ফুড পাইপ থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন দূর করে আপনাকে ঝরঝরে ও রোগমুক্ত রাখবে নলেন গুড়। ঠান্ডা লেগে জ্বর হলে, সর্দিকাশি লাগলে বা মাইগ্রেনের সমস্যা হলে গরম জল বা চায়ে গুড় মিশিয়ে খান। জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা কমে যাবে।
গুড়ে পটাশিয়াম মজুত থাকায় এটি শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স করতে, মাংসপেশি তৈরি করতে এবং মেটাবলিজ়ম বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও গুড় কার্যকরী।
গুড়ের মধ্যে থাকা জ়িঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফ্রি র্যাডিকালের সঙ্গে লড়াই করে শরীরকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক অসুখ থেকে রক্ষা করে। পিরিয়ডের সময়ে পেট ব্যথা, বমি-বমি ভাব বা মুড স্যুইং হলেও এক টুকরো গুড় খেতে পারেন। গুড় শরীরে এন্ডরফিন বা হ্যাপি হরমোন ক্ষরণে সাহায্য করে। ফলে শরীরে রিল্যাক্সড ভাব আসে, মুড ভাল হয়। নিয়মিত গুড় খেলে স্নায়ু এবং রেসপিরেটরি সিস্টেম ভাল থাকে। অ্যাজ়মা, ব্রঙ্কাইটিসের মত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। রোজ এক গ্লাস দুধের সঙ্গে গুড় মিশিয়ে খেলে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমে, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
গুড়ের পুডিং:
উপকরণ: খেজুরের গুড় ১০০ গ্রাম, ফেটানো ডিম ৩টে, দুধ ২ কাপ, খোয়া ক্ষীর ৫০ গ্রাম (কুরনো), কাজু, কিশমিশ, ঘি আন্দাজমতো।
প্রণালী: প্রথমে দুধ, ডিম, খোয়া ক্ষীর এবং খেজুরের গুড় একসঙ্গে ভাল করে মেশান। এতে কাজু ও কিশমিশ দিন। এরপর একটা ঢাকনাওয়ালা কৌটো নিয়ে তাতে ভাল করে ঘি মাখিয়ে রাখুন। হয়ে গেলে পুরো মিশ্রণটা ওই কৌটোতে ঢেলে দিন। পুডিং না জমা পর্যন্ত মিশ্রণটি ওই পাত্রে ভাপিয়ে নিতে হবে। ব্যস, পরিবেশন করার সময় মনে রাখবেন, যেহেতু এই পুডিং অত্যন্ত নরম হয়, তাই সাধারণত এটি চামচে করে সার্ভ করা হয়।

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url