Financial planning: আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে। অথচ ঝুঁকি নিতে চান না। তা কি হয়?
ঝুঁকি না নেওয়াই বিরাট ঝুঁকি:
আর্থিক পরিকল্পনা করতে হবে। অথচ ঝুঁকি নিতে চান না। তা কি হয়? ব্যাখ্যা দিলেন শৈবাল বিশ্বাস।
পরিচিতি: দেবদীপ (৩০), স্ত্রী (২৮), ছেলে (২)
বেসরকারি সংস্থার কর্মী, কলকাতায় নিজেদের ফ্ল্যাট
লক্ষ্য: ভবিষ্যতের তহবিল, সন্তানের উচ্চশিক্ষার খরচ, বেড়াতে যাওয়া, গাড়ি কেনা
নিট আয়: ৭০,০০০
খরচ: ২৫,০০০
বিনিয়োগ
পিপিএফ: ৫০০০
এলআইসি: ৩০০০ (বিমামূল্য ৫ লক্ষ)
রেকারিং: ১৫,০০০
ভিপিএফ: ২০০০
সঞ্চয়:
সেভিংস: ১,৫০,০০০
পিপিএফ: ৫,০০,০০০
(সব হিসাব টাকায়। সঞ্চয় বাদে বাকি হিসাব মাসে)
দেবদীপ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। অন্যান্য বেতনভুক মধ্যবিত্তের মতো তাঁরও বেশ কিছু স্বপ্ন রয়েছে। আর সমস্যা সেই সাধ ও সাধ্যের ফারাক। দেখা যাক সেই ফারাক কিছুটা কমানো যায় কি না।
দেবদীপ বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা রাখা শুরু করেছেন। তবে তার পুরোটাই পিপিএফ, রেকারিং-সহ বিভিন্ন ঝুঁকিহীন প্রকল্পে। সম্ভবত কেউ তাঁকে লগ্নির একাংশ শেয়ারভিত্তিক ফান্ডে টাকা রাখার কথা বলেননি। কিন্তু এই বয়সে তা না করতে পারলে ভবিষ্যতে শুরু করে মুশকিল। তখন আবার মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলা করাও সম্ভব হবে না। কারণ, সুদ দিনে দিনে আরও কমবে। ঝুঁকি না নেওয়াটাই আজকের দিনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি।
সন্তানের পড়াশোনা:
এখন থেকেই ছেলের পড়াশোনার জন্য রেকারিং করা শুরু করেছেন দেবদীপ। টাকা রাখছেন পিপিএফে। খুবই ভাল উদ্যোগ। ১৮ বছর বয়সে পৌঁছে ছেলেকে যদি বেসরকারি এঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াতে হয়, তা হলে তখন সেই খরচ ৪০-৫০ লক্ষ টাকায় পৌঁছতে পারে। এর মধ্যে শুধু রেকারিং আর পিপিএফ দিয়ে কিন্তু ওই জায়গায় পৌঁছনো যাবে না। তার জন্য ডাইভার্সিফায়েড ফান্ডে এসআইপি করার কথা বলব। তবে সবই এক ফান্ডে করবেন না। বিভিন্ন ফান্ডে ছড়িয়ে রাখুন। মাসে মোটামুটি ৭০০০-৮০০০ টাকা করে বিভিন্ন একুইটি ফান্ডে রাখলে ওই সময়ে গিয়ে হাতে আসতে পারে প্রায় ৩৬.৯০ লক্ষ টাকা (১০% রিটার্ন ধরে)।
জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা:
দেবদীপ অফিস থেকে জীবন বিমার টার্ম পলিসি এবং স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পান। এমনিতে ভাল। কিন্তু যদি চাকরি পাল্টাতে বা ছাড়তে হয়, তখন এই বিমা থাকবে না। আর অবসর নেওয়ার পর বিমা কেনার সম্ভাবনা বা আর্থিক অবস্থা হয়তো থাকবেই না। ফলে এখনই নিজের জন্য আলাদা টার্ম পলিসি কিনুন। অন্তত ৫০ লক্ষ টাকার। নিন পরিবারের স্বাস্থ্য বিমাও।
অবসরের জন্য সঞ্চয়:
ভবিষ্যতের কথা ভেবে দেবদীপ সঞ্চয় শুরু করেছেন। এখন থেকে তা আরও সংগঠিত ভাবে ভাবতে হবে। আমার পরামর্শ—
=> পিপিএফে সাধ্য মতো লগ্নি বাড়ান।
=> ডাইভার্সিফায়েড একুইটি ফান্ডে এসআইপি শুরু করুন।
=> জীবন বিমার এনডাওমেন্ট পলিসি সারেন্ডার করলে হাতে কিছু বাড়তি টাকা থাকবে। তা এই দুই প্রকল্পে ভেঙে দিতে পারেন।
=> প্রত্যেক মাসে অল্প কিছু টাকা লিকুইড ফান্ডে রাখতে পারেন। বেড়াতে যাওয়ার সময়ে সেটাই কাজে লাগবে।
গাড়ি কেনা:
দেবদীপের ইচ্ছা গাড়ি কেনা। কিন্তু এখনই ডাউন পেমেন্ট বা সরাসরি টাকা দিয়ে গাড়ি কেনার আর্থিক উৎস দেখা যাচ্ছে না। আমি পরামর্শ দেব, এখন এই পরিকল্পনা কিছু দিন স্থগিত রাখতে। বেতন বাড়ুক। হাতে কিছুটা বাড়তি টাকা আসুক। তার পর এ ব্যাপারে ভেবে দেখা যেতে পারে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url