Insurance Claim: স্বাস্থ্য বীমার ক্লেমের টাকা কোন নিয়মে পাওয়া যায়?
Insurance Claim: স্বাস্থ্য বীমার ক্লেমের টাকা কোন নিয়মে পাওয়া যায়?
স্বাস্থ্য বিমায় জমা দেওয়া টাকা ফেরত মেলে না। কিন্তু দরকারে তা-ই হাত বাড়ায় বন্ধুর মতো। কিন্তু এই বিমা করার সময়ে প্রথমেই যে কথা মনে আসে তা হল, প্রিমিয়াম তো গুনছি। আসল সময়ে গিয়ে চিকিৎসার পুরো খরচটা পাব তো? বিষয়টি বেশ কিছু জিনিসের উপরে নির্ভর করে। যেগুলি বিমা করার সময়েই জেনে রাখা প্রয়োজন। তা হলে পরে গিয়ে ঝক্কি অনেকটাই এড়ানো যায়। অযথা দৌড়োদৌড়ি করতে হয় না।
গোড়ার কথা:-
কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিমার টাকা পাওয়া যায় না। এর মধ্যে থাকবে—
• প্রিএগ্জ়িস্টিং ডিজ়িস। আগে থেকে থাকা রোগের ক্ষেত্রে বিমার টাকা মেলে না। তবে নিয়ম অনুসারে, বিমার পরে চার বছর পেরোলে পঞ্চম বছরে সেই টাকা দিতে বাধ্য সংস্থা। চাইলে অবশ্য তার আগেও সেই সুবিধা মেলে।
• ওয়েটিং পিরিয়ড। বিমা প্রথম শুরুর পরে নির্দিষ্ট কিছু দিন চিকিৎসার খরচ মেলে না। এটা ওয়েটিং পিরিয়ড। তবে এই সময়ে দুর্ঘটনা ঘটলে সাধারণত টাকা পাওয়া যায়।
• এ ছাড়া ক্লেম বাতিল হতে পারে মাদক সেবন বা আত্মহত্যার চেষ্টার কারণে চিকিৎসার দরকার পড়লে। অনেক সময়ে এইচআইভি, এডসের মতো রোগেও বিমার টাকা মেলে না।
কাগজ তৈরি রাখুন:-
বিমার টাকা ক্লেমের জন্য সংস্থার কাছে জমা দিতে হবে চিকিৎসার আসল নথি। ফটোকপি চলবে না। কাগজ ঠিক না-থাকলে খরচ না-ও দিতে পারে বিমা সংস্থা। তাই খুন। তৈরি থাকুক—
ভর্তির আগে:
• ডাক্তারের আসল প্রেসক্রিপশন।
• তাঁর ফি-র রসিদ।
• ওষুধের রসিদ।
• কোনও পরীক্ষা হলে তার রিপোর্ট।
• পরীক্ষার রসিদ।
হাসপাতালের কাগজ
• পুরো বিল এবং তার ব্রেক-আপ। থাকবে আলাদা করে ওষুধ, ডাক্তারের ফি, ঘর ভাড়া, চিকিৎসার সরঞ্জাম (গজ, তুলো, গ্লাভস ইত্যাদি), অপারেশনের ঘরের ভাড়ার হিসাব ইত্যাদি।
• হাসপাতালে পরীক্ষা হলে তার আসল রিপোর্ট ও রসিদ।
• চিকিৎসার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া ডিসচার্জ সার্টিফিকেট। যেখানে লেখা থাকবে ভর্তির মেয়াদ, ওষুধ, চিকিৎসার ধরন ইত্যাদি।
ক্যাশলেস বিমার ক্ষেত্রে হাসপাতাল নিজে থেকেই সমস্ত নথি বিমা সংস্থার কাছে পাঠায়। কী কী নথি যাচ্ছে, তা জেনে রাখা দরকার। রিইম্বার্সমেন্টের ক্ষেত্রে সমস্ত কাগজই রোগীর পরিবারকে সংস্থার কাছে জমা দিতে হবে।
ছুটির পরে:-
• হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও বেশ কিছু দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধ চলে। তার টাকা পেতে ভর্তির আগের নিয়ম মানতে হবে।
• হাসপাতালে ভর্তির আগে ও পরে কত দিন বিমার টাকা পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে বিমা সংস্থা ও প্রকল্পের উপরে।
রাখুন ফটোকপি
• বিমা সংস্তাকে আসল নথি দিতে হয়। তাই তার ফটোকপি করে নিজের কাছে রাখুন।
খেয়াল রাখুন:-
যে কোনও খাতে টাকা রাখার মতোই চিকিৎসা বিমাতেও বেশ কিছু বিষয় মনে রাখতে হয়। যেমন—
• কিছু বিমা থাকে, যেখানে কোনও রোগের জন্য আলাদা করে টাকা নির্দিষ্ট করা থাকে না। সে ক্ষেত্রে কাগজ ঠিক থাকলে খরচের পুরোটাই মেলে।
• অনেক বিমায় নির্দিষ্ট রোগের চিকিৎসা খাতে নির্দিষ্ট টাকা বরাদ্দ করা থাকে। সে ক্ষেত্রে বলা টাকার বাইরের খরচ নিজেকেই দিতে হয়।
• আবার বহু ক্ষেত্রে বিমার মধ্যে ডাক্তার, হাসপাতালের ঘর বা বেড ভাড়া, পরীক্ষার মতো বিভিন্ন খাতে নির্দিষ্ট টাকা বরাদ্দ থাকে। তার বেশি খরচ হলেও, বাড়তি দিতে হয় রোগীকেই।
• হাসপাতালে বেশি বিল করার অভিযোগ দেখা যায় বহু সময়েই। তাই প্রতিদিন পারলে বিল খুঁটিয়ে দেখুন। দরকারে কথা বলুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
দু’টি পলিসি থাকলে:-
একই সঙ্গে ব্যক্তিগত এবং অফিসের পলিসি থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে একই রোগের চিকিৎসায় দু’টি পলিসির টাকা মেলে। একটি বিমার টাকায় পুরো খরচ না-মিটলে দ্বিতীয়টি ব্যবহার করা যায়। তবে দু’টি সংস্থার সঙ্গে হাসপাতালের ক্যাশলেসের জন্য চুক্তি থাকলে দু’টিতেই সেই সুবিধা মেলে। অন্যটির ক্ষেত্রে রিইম্বার্সমেন্ট নিতে হবে। সাধারণত প্রথম যে সংস্থায় সব নথি জমা দিয়ে দাবি জানানো হয়, সেখানে ক্যাশলেস মেলে। দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে আগে বাকি টাকা মিটিয়ে সেই খরচ দাবি করতে হয়। প্রথমে কোন পলিসি ব্যবহার করবেন, তা বিমাকারীই ঠিক করবেন। মনে রাখুন—
• দু’টি পলিসির কথা প্রথমেই হাসপাতালকে জানানো ভাল।
• প্রথম বিমা সংস্থা চিকিৎসা খরচের যতটা অনুমোদন করবে, ততটুকুর জন্য ক্যাশলেসের সুবিধা পাওয়া যাবে। বাকি অংশের টাকা নগদে হাসপাতালকে মেটাতে হবে।
• হাসপাতাল চিকিৎসার খরচের পুরো হিসাব, বিল ইত্যাদি কাগজ প্রথম বিমা সংস্থার কাছেই পাঠাবে। তাই কোন খাতে কত টাকা প্রথম বিমা সংস্থা মেটাল, সেই সংক্রান্ত সার্টিফিকেট বিমা সংস্থার কাছ থেকে নিতে হবে। এ ছাড়া খরচের যে অংশের টাকা প্রথম সংস্থা মেটায়নি, সেই খরচের বিল ইত্যাদির সার্টিফায়েড কপিও তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে।
• ওই দু’টি সার্টিফিকেট-সহ নির্দিষ্ট দাবি ফর্মে (ক্লেম ফর্মে) দ্বিতীয় বিমা সংস্থার কাছে রিইমবার্সমেন্টের জন্য পেশ করতে হবে।
• দু’টি বিমা থাকলে প্রতিটি কাগজের দু’টি করে ফটোকপি করাতে হবে। আসলটা যাবে প্রথম বিমা সংস্থায়, একটি ফটোকপি পরের বিমা সংস্থায় এবং আর একটি রোগীর কাছে থাকবে।

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url