Legal Aid: মৃত্যুর আগে নিজের সম্পত্তি কিভাবে আইনতভাবে অন্যের নামে করবে?

 Legal Aid: মৃত্যুর আগে নিজের সম্পত্তি কিভাবে আইনতভাবে অন্যের নামে করবে?



সারা জীবন তিল তিল করে জমানো অর্থ বা গড়ে তোলা সম্পদ পারিবারিক বিবাদে নষ্ট হোক, সেটা কেউই চান না। তা আটকানোর অন্যতম পথ নিজের সম্পত্তি উইল করে দিয়ে যাওয়া। তারই দিশা দিতে আজকের এই আলোচনা।

উইল কী?

এককথায় বলতে গেলে ইচ্ছাপত্র। অর্থাৎ,আপনার ইচ্ছামতো তৈরি হবে একটি নথি। যার মাধ্যমে সম্পত্তি ও অর্থ পছন্দের উত্তরাধিকারীদের দিয়ে যেতে পারেন। যেখানে লেখা থাকবে, উইল যিনি করছেন তাঁর মৃত্যুর পরে যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা কার হাতে এবং কতটা যাবে। এটি কার্যকরও হবে উইলকারীর মারা যাওয়ার পরে। তবে তিনি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর সম্পত্তি ভোগ-দখলের অধিকার উত্তরাধিকারীর নেই। এ জন্য আদালতের থেকে সার্টিফিকেট (প্রবেট) নিতে হবে। প্রবেটের মাধ্যমেই প্রমাণ হয় যে উইলটি বৈধ।

করতে পারেন কারা?

উইল করতে হলে—
• প্রাপ্তবয়স্ক (কমপক্ষে ১৮ বছর) হতে হবে।
• মানসিক ভারসাম্যহীন হলে চলবে না।
• তবে সুস্থ ও সচেতন ভাবে উইল করার পরে কোনও কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে, সেই উইল আইনের চোখে গ্রাহ্য ধরা হবে।
• দৃষ্টি, বাক্ কিংবা শ্রবণশক্তি না-থাকলেও উইল করতে পারেন। কিন্তু উইলের ফলশ্রুতি সম্পর্কে তাঁকে পুরোদস্তুর ওয়াকিবহাল হতে হবে।

খারিজ কখন:

• যদি কেউ প্রমাণ করেন যে, তা জোর করে বা ভুল বুঝিয়ে করানো হয়েছে, তা হলে উইল বাতিল হবে।
• যদি দেখা যায় যে, উইল করার সময় কোনও কারণে নিজের স্বাধীন চিন্তা প্রয়োগের রাস্তা খেলা ছিল না, সে ক্ষেত্রেও তা খারিজ হবে।

কী ভাবে:

উইল যে স্ট্যাম্প পেপারেই করতে হবে, তা নয়। সাদা কাগজে করলেও আইনত স্বীকৃত।

বদলাতে চাইলে:

যত বার খুশি উইল বদলানো যায়। সে ক্ষেত্রে একেবারে শেষ বার যে উইলটি করবেন (বেঁচে থাকা অবস্থায় শেষ তারিখে), সেটি মেনেই ভাগ হবে সম্পত্তি। তবে খেয়াল রাখতে হবে, এমনিতে উইল বদলানো বেশ সহজ। কিন্তু তা রেজিস্ট্রি করা থাকলে, সেটি বাতিলের জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হতে পারে।

সাক্ষী লাগবেই:

উইল সইয়ের সময় সাক্ষী রাখা বাধ্যতামূলক। দু’তিন জন থাকলে ভাল হয়। যাঁরা নিজের চোখে দেখবেন সই করতে। এঁদের মধ্যে এক জন ডাক্তার ও এক জন আইনজীবী থাকলে ভাল। কারণ উইল করার সময় আপনি যে সুস্থ মস্তিষ্কে ছিলেন, তা প্রমাণের ক্ষেত্রে ডাক্তারের বয়ান গুরুত্ব পেতে পারে। তেমনই আইনি জটিলতায় কাজে আসতে পারে আইনজীবীর সাক্ষ্য।

রেজিস্ট্রি না-হলেও চলে:-

উইল রেজিস্ট্রি (নথিভুক্ত) করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে করে রাখলে, কিছু বাড়তি সুবিধা আছে। যেমন—
• এ ক্ষেত্রে উইলের কপি থাকবে রেজিস্ট্রারের দফতরে। ফলে কেউ তা বিকৃত (ট্যাম্পার) করলে পার পাওয়া কঠিন।
• উইল হারালে বা নষ্ট হলে অথবা কেউ তা ইচ্ছা করে নষ্ট করলে, রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে সার্টিফায়েড কপি মিলবে।
• অসুস্থতার কারণে উইলকারী অফিসে যেতে না-পারলে, বাড়িতে রেজিস্ট্রারকে এনে রেজিস্ট্রি করা যায়।
• রেজিস্ট্রি করা উইলের মাধ্যমে প্রবেট পাওয়ার আগেও লিজহোল্ড সম্পত্তির ক্ষেত্রে নাম খারিজ বা মিউটেশন করানো যায়।
• তবে এক বার উইল নথিবদ্ধ হলে, যত বার তা পাল্টাবেন, তত বারই নতুন করে রেজিস্ট্রি করতে হবে।

এগ্জ়িকিউটর জরুরি:-

যিনি উইল কার্যকর (এগ্জ়িকিউট) করেন, তিনিই এগ্জ়িকিউটর। মনে রাখতে হবে—
• উইল করার সময় এগ্জ়িকিউটর নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু কেউ থাকলে সেটি কার্যকরের ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
• সাধারণত বিশ্বস্ত কাছের মানুষকে এগ্জ়িকিউটর করা হয়।
• যাঁরা সম্পত্তি পাবেন, তাঁদের কাউকেও এগ্জ়িকিউটর হিসেবে বাছা যেতে পারে। কোনও সলিসিটর ফার্ম (আইনি পরামর্শদানের সংস্থা), কোম্পানি, ট্রাস্ট (অছি পরিষদ) কিংবা ব্যাঙ্কও এই কাজ করতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url