Wedding snacks: বিয়েবাড়ির জলখাবার
বিয়েবাড়ির জলখাবার:
লুচি-ডাল, কচুরি-তরকারির বাইরে আর কী জলখাবার হতে পারে বিয়েবাড়িতে? একগুচ্ছ পদের সন্ধান দিলেন হোম শেফ অমৃতা রায়। স্বাদ নিলেন সংবেত্তা চক্রবর্তী।
মুগলেট, ধনেপাতা ওবাদামের চাটনি
উপকরণ: মুগলেটের জন্য: মুগ ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজ ১/২খানা (কুচি করা), ক্যাপসিকাম ১/২খানা (কুচি করা), টমেটো ১/২খানা, ধনেপাতা কুচি ২ টেবলচামচ, কাঁচালঙ্কা ২টো (কুচি করা), চাট মশলা ১/৪ টেবলচামচ, হিং ১ চিমটে, হলুদ গুঁড়ো১/২ চা-চামচ, মাখন ২ টেবলচামচ, নুন স্বাদমতো, বেকিং সোডা ১/২ চা-চামচ। ধনেপাতা-বাদামের চাটনির জন্য: ধনেপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচালঙ্কা ৩-৪টে, রসুন ৪-৫ কোয়া, চিনেবাদাম ২ টেবলচামচ, লেবুর রস ২ টেবলচামচ সামান্য নুন, অল্প জল।
প্রণালী: মুগ ডাল ২-৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর মিক্সিতে মিহি করে বেটে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এবার প্রয়োজন অনুযায়ী সামান্য জল দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। একটি পাত্রে মিশ্রণটি বের করে নিন। স্বাদমতো নুন, এক চিমটে হিং এবং চাটমশলা দিন। এবার মিহি করে কাটা পেঁয়াজ, টমেটো, ক্যাপসিকাম, কাঁচালঙ্কা কুচি ও ধনেপাতা কুচি মেশান। ভাল করে ফেটিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। ১/২ চা-চামচ বেকিং সোডা এবং ২ চা-চামচ জল মিশিয়ে আরও একবার ফেটিয়ে নিন। একটি ছোট প্যানে ১ টেবলচামচ মাখন গরম করুন। প্যানে অর্ধেক মিশ্রণ ঢেলে চাপা দিয়ে ৩ মিনিট রাখুন। তারপর উলটে দিয়ে আরও ২ মিনিট রাখুন মুচমুচে হওয়া পর্যন্ত। সবশেষে উপরে আরও ১ চা-চামচ মাখন দিয়ে নামিয়ে নিয়ে ইচ্ছেমতো শেপে কেটে পরিবেশন করুন মুগলেট। চাটনি বানাতে ধনেপাতা কুচি, কাঁচালঙ্কা, রসুন, চিনেবাদাম, স্বাদমতো নুন এবং অল্প জল দিয়ে মিক্সিতে মিহি করে বেটে নিন। এরপর বাটিতে এই মিশ্রণ নিয়ে উপর থেকে ২ টেবলচামচ লেবুর রস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ঝুরো ডিমের ঘুগনি:
উপকরণ: মটর ২০০ গ্রাম, কাঁচা ডিম ২টো, সেদ্ধ ডিম ১টা, আলু ১টা, পেঁয়াজ ২টো (মিহি কুচনো), টমেটো ১টা (মিহি কুচনো), আদা বাটা ১ টেবলচামচ, রসুন বাটা ১১/২ টেবলচামচ, আস্ত শুকনোলঙ্কা ২টো, ছোট এলাচ ৪টে, দারচিনি ২ ইঞ্চি, ধনে গুঁড়ো ১ চা-চামচ, জিরে গুঁড়ো ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা-চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, নুন স্বাদমতো, সর্ষের তেল ১/২ কাপ।
প্রণালী: রান্নার আগের দিন রাত্রে মটর ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন জল পাল্টে, ভাল করে ধুয়ে প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করুন। আলু ছোট টুকরো করে ভেজে নিন। কড়াইতে তেল দিয়ে প্রথমে আস্ত শুকনোলঙ্কা, এলাচ, দারচিনি ফোড়ন দিন। এরপর পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে, প্রথমে টমেটো কুচি দিন। ভাল করে কষে নিন। এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং জিরে গুঁড়ো দিয়ে, তেল ছেড়ে আসা অবধি মাঝারি আঁচে রান্না করুন। দুটো ডিম ফেটিয়ে দিয়ে, ঝুরো করে নিন। এবার জল সমেত সেদ্ধ করে রাখা মটর, ভেজে রাখা আলু, স্বাদমতো নুন আর কয়েক দানা চিনি (চাইলে বাদও দিতে পারেন) দিন। চাপা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট কম আঁচে ফুটতে দিন। সবকিছু সুসিদ্ধ হয়ে গেলে পাত্রে নামিয়ে নিয়ে উপর থেকে সিদ্ধ ডিম গ্রেট করে দিন। কাঁচালঙ্কা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি আর লেবুর রস ছড়িয়ে দিলেই ঝুরো ডিমের ঘুগনি তৈরি।
ডিমের কচুরি :
উপকরণ: পুরের জন্য: মুরগির ডিম ৩টে, পেঁয়াজ ১টা (কুচি করা), মিহি কুচনো ধনেপাতা ১ মুঠো, কাঁচালঙ্কা ২টো (মিহি করে কুচনো), নুন স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়ো ১/৪ চা-চামচ , ভাজা জিরের গুঁড়ো ১/২ চা-চামচ, সাদা তেল ২ চা-চামচ। কচুরির জন্য: ময়দা ২ কাপ, চিনি ১ চা-চামচ, নুন ১ চা-চামচ, ভাজার জন্য সাদা তেল ১ কাপ।
প্রণালী: ফ্রাইং প্যানে ২ চা-চামচ সাদা তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিন। বাদামি রং আসা অবধি ভাজুন। তারপর ওতে ৩টে ডিম ভেঙে মিশিয়ে দিয়ে, ঝুরো করে ভেজে নিন। একে একে ধনেপাতা কুচি, কাঁচালঙ্কা কুচি, ভাজা জিরের গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো আর আন্দাজমতো নুন মিশিয়ে, নামিয়ে থালায় ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন। ময়দায় নুন, চিনি আর সামান্য সাদা তেল দিয়ে ময়ান দিন। তারপর জল দিয়ে শক্ত করে মেখে রাখুন। ইচ্ছেমতো সাইজ়ের লেচি কেটে নিয়ে, তার ভিতর ডিমের পুর দিয়ে ভাল করে মুড়িয়ে নিন। লুচির আকারে বেলে ছাঁকা তেলে ভেজে তুলুন ডিমের কচুরি। স্যালাড অথবা যে কোনও তরকারি দিয়ে পরিবেশন করুন।
পালংশাকের পরোটা, দই আদার চাটনি:
উপকরণ: পরোটার জন্য: আটা ১ কাপ, ময়দা ১/২ কাপ, পালংশাক ১ আঁটি, ধনেপাতা কুচি ১/২ বাটি, রসুনের কোয়া ৪টে, কাঁচালঙ্কা ২-৩টে, নুন স্বাদমতো, সাদা তেল। চাটনির জন্য: টক দই ১ বাটি, চিনি ৩ চা-চামচ, নুন ১/২ চা-চামচ, লেবুর রস ২ চা-চামচ, আদা বাটা ১১/২ চা-চামচ।
প্রণালী: পালংশাক ১০ মিনিট গরমজলে ফুটিয়ে, বরফ-ঠান্ডা জলে রাখুন আরও কিছুক্ষণ। মিক্সিতে এই পালংশাক নিয়ে, ধনেপাতা, রসুন আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে মিহি পেস্ট করে নিন। আটা আর ময়দা নিয়ে তাতে দু’চা-চামচ সাদা তেল আর অল্প নুন মিশিয়ে ময়ান দিন। এরপর পালংশাকের মিশ্রণ মিশিয়ে ভাল করে মেখে নিন। প্রয়োজনে অল্প জল দিতে পারেন। মাখা হয়ে গেলে চাপা দিয়ে রাখুন আন্দাজ ১৫ মিনিট। তারপর মাঝারি মাপের লেচি কেটে পরোটার আকারে বেলে নিন। তাওয়ায় সাদা তেল দিয়ে এপিঠ-ওপিঠ করে ভেজে নিন পালংশাকের পরোটা। বাটিতে টক দই নিয়ে তাতে চিনি, নুন, লেবুর রস আর আদা বাটা ভালভাবে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে দই আদার চাটনি। পালংশাকের পরোটার সঙ্গে এই চাটনি পরিবেশন করুন।
পাঁঠার ঘুগনি:
উপকরণ: মটর ২০০ গ্রাম, হাড় ছাড়া পাঁঠার মাংস ২৫০ গ্রাম (ছোট ছোট করে কাটা), আলু ১টা, পেঁয়াজ ২টো (মিহি করে কুচনো), টমেটো ১টা (মিহি করে কুচনো), আদা বাটা ১ টেবলচামচ, রসুন বাটা ১১/২ টেবলচামচ, আস্ত শুকনোলঙ্কা ২টো, ছোট এলাচ ৪টে, দারচিনি ২ ইঞ্চি, হলুদ গুঁড়ো১ চা-চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, নুন স্বাদমতো, সর্ষের তেল ১/২ কাপ।
প্রণালী: রান্নার আগের দিন রাতে মটর ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন জল পাল্টে ভাল করে ধুয়ে, প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করুন। আলু ছোট টুকরো করে ভেজে নিন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে প্রথমে আস্ত শুকনো লঙ্কা, এলাচ, দারচিনি ফোড়ন দিন। এরপর পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে, টমেটো কুচি দিন। ভাল করে কষে নিন। এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো দিন। ছোট করে কেটে রাখা পাঁঠার মাংস দিয়ে, কম আঁচে কষতে থাকুন। প্রয়োজনে অল্প অল্প জলের ছিটে দিয়ে কষবেন। তেল ছেড়ে এলে, জল সমেত সেদ্ধ করে রাখা মটর, ভেজে রাখা আলু, স্বাদমতো নুন আর কয়েক দানা চিনি দিন, চাইলে চিনি না-ও দিতে পারেন। চাপা দিয়ে ১৫-২০ মিনিট কম আঁচে ফুটতে দিন। তারপর একবার দেখে নিতে হবে মাংস সেদ্ধ হয়েছে কি না, না হলে আরও একটু গরম জল মিশিয়ে আবার ৫-১০ মিনিট চাপা দিয়ে ফোটান। সব কিছু সুসিদ্ধ হয়ে গেলে পাত্রে নামিয়ে নিন। উপর থেকে কাঁচালঙ্কা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি আর লেবুর রস ছড়িয়ে মুখে ফেলে দেখুন!
ফুলকপির পরোটা:
উপকরণ: আটা ২ কাপ, ফুলকপি ১টা, গোটা জোয়ান ১ চা-চামচ, আদা ১ ইঞ্চি, ধনে আর শুকনোলঙ্কা ভেজে গুঁড়ো করা ২ চা-চামচ, ধনেপাতা কুচি ১/৪ কাপ, কুচনো কাঁচালঙ্কা ২টো (বাদও দিতে পারেন), নুন স্বাদমতো, ঘি অথবা সাদা তেল।
প্রণালী: ফুলকপি ধুয়ে, জল ঝরিয়ে শুকনো করে নিন। আটাতে নুন আর অল্প অল্প জল দিয়ে মসৃণ করে মেখে নিন। ভিজে কাপড় দিয়ে চাপা দিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। ফুলকপি গ্রেট করে নিন। এতে জোয়ান আর ভাজা মশলার গুঁড়ো মেশান। আদা গ্রেট করে মেশান, ধনেপাতা, কাঁচালঙ্কা কুচি মিশিয়ে নিন। একদম শেষে অল্প নুন মেশান। আগে থেকে নুন মেশালে পুর থেকে জল বেরোবে এবং পরোটা বেলতে অসুবিধা হবে। এবার রুটির চেয়ে একটু বড় সাইজ়ের লেচি কেটে তার ভিতর ২ চামচ করে পুর ভরে, লেচির চারদিক থেকে ভাল করে মুড়িয়ে নিন। আটা ছড়িয়ে হালকা চাপে বেলতে হবে, যাতে ফেটে পুর না বেরিয়ে আসে। এবার তাওয়াতে একটা একটা করে পরোটা সেঁকে ঘি অথবা সাদা তেল দিয়ে দু’পিঠ ভাল করে ভেজে তুলুন ফুলকপির পরোটা।
বেনারসি স্টাইল চুড়া মটর:
উপকরণ: মোটা চিঁড়ে ১ বাটি, ছাড়ানো কড়াইশুঁটি ১ বাটি, কাজুবাদাম ১০-১২টা, দুধ ৪ চা-চামচ, সাদা জিরে ১ চা-চামচ, ছোট এলাচ সামান্য (ভেজে গুঁড়ো করা), তেজপাতা ২টো, গোটা সাদা জিরে ১/২ চা-চামচ, কাঁচালঙ্কা ২টো (কুচনো),অল্প ধনেপাতা কুচি (বাদও দিতে পারেন), আদা ১ ইঞ্চি (কুচনো), হিং ১ চিমটে, চিনি ১ চা-চামচ, ঘি ১ চা-চামচ (বাদও দিতে পারেন), সাদা তেল ২ চা-চামচ, নুন স্বাদমতো।
প্রণালী: চিঁড়ে দু’তিনবার ধুয়ে, জল ঝরিয়ে রাখুন। একটা পাত্রে ঢেলে নিয়ে, ওতে দুধ মিশিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। কড়াইয়ে তেল নিয়ে, কাজুবাদাম ভেজে তুলুন। ওই তেলে তেজপাতা, সাদা জিরে ফোড়ন দিন। আদাকুচি দিয়ে হালকা ভেজে, হিং আর কড়াইশুঁটি দিন। ভাল করে মিশিয়ে সামান্য জল ছিটিয়ে চাপা দিন। কড়াইশুঁটি সেদ্ধ হলে, চিঁড়ে মেশান। নুন আর চিনি দিন। ভাজা মশলার গুঁড়ো দিয়ে, কাজুবাদাম আর কাঁচালঙ্কা কুচি মেশান। ঘি এবং ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে, নামিয়ে নিন।
ছানার নোনতা পাটিসাপটা:
উপকরণ: পুরের জন্য: জল-ঝরানো ছানা ১ কাপ, মিহি কুচনো আদা ১ চা-চামচ, মিহি কুচনো পেঁয়াজ ১টা, সেদ্ধ করা আলু ১টা, কড়াইশুঁটি ১/৪ কাপ, কিশমিশ ১০-১২টা, কাঁচালঙ্কা ২-৩টে (কুচি করা), চিনেবাদাম অল্প, নুন স্বাদমতো, সাদা তেল ২ চা-চামচ। গোলার জন্য: ময়দা ১ কাপ, সুজি ১/২ কাপ, চালের গুঁড়ো ২ টেবলচামচ, নুন সামান্য।
প্রণালী: একটি পাত্রে ময়দা, সুজি, চালের গুঁড়ো আর জল দিয়ে একটা মাঝারি ঘন গোলা তৈরি করুন। এতে অল্প নুন মিশিয়ে ১৫ মিনিট ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। কড়াইতে সাদা তেল দিয়ে চিনেবাদাম ভেজে তুলুন। ওই তেলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নরম হওয়া অবধি ভাজুন। এতে মিহি করে কুচনো আদা এবং কাঁচালঙ্কা কুচি দিন। আরও একটু ভেজে নিয়ে একে একে সেদ্ধ করা আলু, কড়াইশুঁটি আর জল-ঝরানো ছানা দিয়ে ভাজতে থাকুন। কিশমিশ আর চিনেবাদামও মিশিয়ে নিন। নুন দিন স্বাদমতো। সব কিছু ভালভাবে মিশে গেলেই পুর তৈরি। এরপর একটা ননস্টিক ফ্রাইং প্যানে অল্প করে তেল ব্রাশ করে নিন। এতে এক হাতা করে গোলা দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গোল আকার বানিয়ে নিন। ভিতরে পুর দিয়ে সাবধানে মুড়ে নিতে হবে। পাটিসাপটার মতো করে ভেজে নিন। সস দিয়ে ভাল লাগবে।
আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url