Projapoti: প্রজাপতি বাংলা সিনেমার সম্পূর্ণ কাহিনী

 প্রজাপতি বাংলা সিনেমার সম্পূর্ণ কাহিনী


প্রজাপতি

পরিচালনা: অভিজিৎ সেন

অভিনয়: মিঠুন চক্রবর্তী, দেব, মমতাশঙ্কর, শ্বেতা ভট্টাচার্য, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, অম্বরীশ ভট্টাচার্য

রেটিং: ৪/৫

বাবা-ছেলের সম্পর্ক এমন একটা সম্পর্ক যেটা সত্যি বোঝা খুব কঠিন। যুগ-যুগান্ত ধরে এই সম্পর্কের ভিতরের রসায়ন কেউ-ই ঠিকমতো বুঝতে পারেনি। বিশেষ করে ছেলে যখন বড় হয়ে যায়, তখন তার সঙ্গে বাবার একটা অদ্ভুত জটিল সমীকরণ তৈরি হয়। পরিচালক অভিজিৎ সেন ঠিক সেই জায়গাটাই ধরতে চেয়েছেন এবং তিনি যে তাতে একশো শতাংশ সফল, তা বলাই যায়। 

এই ছবির গল্পে গৌর চক্রবর্তী (মিঠুন) একজন সাড়ে ৭৪ বছরের বৃদ্ধ, যে তার স্ত্রীর প্রয়াণের পর থেকে, ছেলে জয়ের (দেব) কাছে বাবা এবং মা, উভয়ের দায়িত্বই পালন করে এসেছে। কিন্তু এবার সে চায় ছেলের বিয়ে দিয়ে নিজে একটু অবসর নিতে। এদিকে জয় একজন ওয়েডিং প্ল্যানার এবং সে আপাতত বিয়ে করতে চায় না। তার মনে এও ভয় আছে যে, বউ বাড়িতে এলে বাবা-ছেলের সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। তার নিজের দিদি রুমি (কনীনিকা) বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে উপরের তলায় থাকে এবং একা শাশুড়িকে নিচের তলায় পাঠিয়ে দিয়েছে। 

এইসব দেখে বিয়ের প্রতি আরও আতঙ্ক জন্মায় জয়ের মনে। জয়ের কোম্পানিতে চাকরি করা মালার (শ্বেতা) সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ, বা গৌরের সঙ্গে তার কলেজের বন্ধু কুসুমের (মমতা শঙ্কর) সাক্ষাৎ, কুসুমের মেয়ে জয়শ্রী (কৌশানী)... এসবকিছু নিয়ে গল্প এগিয়ে চলে। কিন্তু তারপর পুরো অঙ্কটাই বদলে যায়। কী সেই বদল? সেটা প্রেক্ষাগৃহের জন্যই তোলা থাক। এই ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ বাবা-ছেলের রসায়ন পরদায় জমাটিভাবে তুলে ধরা। অসামান্য অভিনয় করেছেন মিঠুন, তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন দেব। বলাই যায়, আজ অবধি এটাই দেবের সেরা পারফরম্যান্স। মমতাশঙ্কর, শ্বেতা, কনীনিকা, কৌশানী, নিজ-নিজ চরিত্রে যথাযথ অভিনয় করেছেন। 

আলাদা করে উল্লেখ করতেই হয় অম্বরীশের কথা। এই ছবিতেও তাঁর দক্ষ অভিনয়ের প্রমাণ দিয়েছেন। তবে খরাজ এবং বিশ্বনাথের অভিনয় বেশ একঘেয়ে লাগে। ছবির গল্পে দেব ওয়েডিং প্ল্যানার অথচ গ্যাসের নব লাগাতে জানেন না বা যে ছেলে বাবার একটি সিদ্ধান্তের জোরালোভাবে বিরোধিতা করছিল, সে হঠাৎ করে খুব সহজেই বাবাকে সাপোর্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়, এই ছোট-ছোট বিষয়গুলো বাদ দিলে এই ছবির জন্য অভিজিৎ একশো শতাংশ নম্বর পেতে পারেন। ছবির আর এক সম্পদ এর মিউজ়িক। গানগুলো ছোট-ছোট করে ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু বিশেষ করে নচিকেতা এবং অনুপম রায়ের গান দুটি মনে থেকে যায়। ক্যামেরা এবং সম্পাদনার কাজও প্রশংসনীয়। সবমিলিয়ে শীতের বাজারে এই প্রজাপতি মন  ভাল করে দেবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url