কী দেখে কিনবেন জীবন বিমা | What to look for to buy life insurance

 


কী দেখে কিনবেন জীবন বিমা | What to look for to buy life insurance


কী দেখে কিনবেন জীবন বিমা:

জীবন এমনিতেই অনিশ্চয়তায় ভরা। তার উপরে সেই দোলাচল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে করোনা। বাড়ছে রুজি-রোজগার, রোগ এবং তার চিকিৎসা নিয়ে চিন্তা। এই অবস্থায় মানুষের জীবন বিমা করার প্রয়োজন বেড়েছে। কিন্তু বিমা তো করছেন, জানেন কি তাতে কী কী বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। চলুন চোখ রাখি।

বিমা কেন:

পরিবারের রোজগেরে মানুষটি আচমকা কিছু হলে টাকার অভাবে প্রিয়জনদের যাতে পথে দাঁড়াতে না-হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই জীবন বিমা করা হয়। যাতে তাঁদের রোজকারের জীবনযাপন, দৈনন্দিন প্রয়োজন, সন্তানের পড়াশোনা, সামাজিক নিরাপত্তা বজায় থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই যে বিষয়টি মাথাতে গেঁথে নেওয়া ভাল তা হল, বিমা সঞ্চয় নয়। ফলে টাকা জমানো এর লক্ষ্য হতে পারে না। বরং ভেবে দেখতে হবে ভবিষ্যতে কত টাকা হাতে এলে স্বচ্ছন্দে সংসার চলবে। সেটাকেই বিমার অঙ্ক ধরে কিনতে হবে পলিসি।

সংস্থা বাছাই:

বাজারে বহু সংস্থার একাধিক বিমা রয়েছে। তাই কোন সংস্থার বিমা কিনবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগা স্বাভাবিক। এ জন্য প্রথমে দেখুন কোন সংস্থার ক্লেম সেটলমেন্ট রেশিয়ো কত। অর্থাৎ কোনও বছরে বিমার টাকা দাবি করে শতকরা কত জন গ্রাহক তা পাচ্ছেন। বিমার টাকা দাবি করার পরে তা হাতে পেতে গড়ে ক’দিন লাগছে, সেটাও দেখুন। এর পরে আসবে প্রিমিয়াম এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধার প্রশ্ন।

খুঁটিয়ে দেখুন:

• নিজের হাতে বিমা সংক্রান্ত ফর্ম ভর্তি করুন। এজেন্ট বা অন্য কারও উপরে ভরসা করবেন না। সড়গড় না-হলে এজেন্টকে বা পরিচিত ব্যক্তিকে তা পূরণ করার কথা বলতে পারেন, তবে খেয়াল রাখুন কোথায় কী লেখা হচ্ছে।

• ঠিকানা, পরিচয়ের প্রমাণপত্র মেলান। কারণ কোনও কাগজে ভুল-ভ্রান্তি থাকলে প্রয়োজনের সময় ক্লেম বাতিল হতে পারে। কোনও নথি বাদ যাচ্ছে কি না, সেটাও দেখে নিন।

• পলিসির কাগজ হাতে পাওয়ার পরে পুরোটা ভাল করে পড়ুন। ভুল থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে তা বদলানোর বা ঠিক করার সুযোগ পাওয়া যায়। এই সময়টার নাম ফ্রি লুক পিরিয়ড।

থাকুক নমিনি:

পলিসি কেনার সময়ই নমিনির নাম উল্লেখ করুন। কারণ, সেটা না-করলে বিমাকারীর মৃত্যুর পরে দাবি করার সময় উত্তরাধিকারীকে সাকসেশন সার্টিফিকেট জোগাড়ের জন্য ছুটোছুটি করতে হবে। ক্লেম জমা দিতে ও টাকা পেতে অযথা সময় নষ্ট হবে।

কেনার পরে:

বিমা কেনা মানেই দায়িত্ব শেষ, তা নয়। তার পরে যা করতে হবে—

• পরিবারের বাকিদের বা অন্তত কাছের এক জনকে বিমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে রাখুন। জানাতে হবে ক্লেম করার প্রক্রিয়া এবং সে জন্য কোথায় বা কার কাছে যেতে হবে।

• প্রিমিয়াম ঠিকঠাক দেওয়া না-হলে বিমার টাকা পেতে সমস্যা হবে অথবা তা না-ও মিলবে পারে। তাই টাকা জমার তারিখ মাথায় রাখুন।

• নির্দিষ্ট সময়ে প্রিমিয়াম না-দিলে জমা দেওয়া পুরো টাকাই বাজেয়াপ্ত হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা ফের চালু করা গেলেও, বকেয়া টাকা কিন্তু মেটাতে হবেই।

খেয়াল রাখুন:

পলিসি কেনার পরে চাইলে দু’ভাবে তা বন্ধ করা যায়। সেগুলি হল—

• পেড আপ। এতে প্রিমিয়াম আর দিতে হয় না। কিন্তু তেমনই তোলা যাবে না আগে জমা দেওয়া টাকাও। তবে বিমার সুবিধা মেলে পুরো মেয়াদ জুড়ে। মেয়াদ শেষে পেড-আপের অঙ্ক ফেরত পাবেন। বোনাস পেতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পলিসি চালাতেই হয়। মেয়াদ পূর্তির আগে বিমাকারীর মৃত্যু হলে বোনাস সমেত পেড-আপের টাকা পাবেন নমিনি।

• পলিসি সারেন্ডার। প্রকল্প চালাতে না চাইলে ন্যূনতম মেয়াদের পরে সেটি ফেরত দিয়ে সারেন্ডার ভ্যালু মিলবে। এতে বিমার সুবিধা আর থাকে না। সংস্থা টাকা মেটানো মানে গ্রাহকের জীবনের ঝুঁকির দায় আর তাদের নয়।

• ইউলিপ প্রকল্পে পেড-আপের সুবিধা নেই। শুধু পলিসি সারেন্ডার করা যেতে পারে।

করে ছাড়:

• আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী বিমার প্রিমিয়ামে কর ছাড় পাওয়া যায়।

• তবে ইউলিপের ক্ষেত্রে বিমার অঙ্ক প্রিমিয়ামের অন্তত ১০ গুণ না-হলে ওই সুবিধা মেলে না।

• শর্ত সাপেক্ষে মেয়াদ শেষে প্রাপ্ত টাকায় আয়কর আইনের ১০(১০)ডি ধারায় করছাড় মেলে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url