সংশ্লিষ্টরা মূল বেতনের উপর ১ মার্চ থেকে ৬% ডিএ (আগের ঘোষিত ৩% মিলিয়ে) পাবেন
সংশ্লিষ্টরা মূল বেতনের উপর ১ মার্চ থেকে ৬% ডিএ (আগের ঘোষিত ৩% মিলিয়ে) পাবেন
রাজ্য সরকারি-অধিগৃহীত-পোষিত, পঞ্চায়েত, পুরসভা, স্বশাসিত সংস্থার কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমাজের জন্য তিন শতাংশ ডিএ ঘোষণা হয়েছিল বিধানসভার বাজেট পেশের দিনই।
শুক্রবার তারই সরকারি আদেশনামা প্রকাশ করল অর্থ দফতর। তাতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্টরা মূল বেতনের উপর ১ মার্চ থেকে ৬% ডিএ (আগের ঘোষিত ৩% মিলিয়ে) পাবেন। অবসরপ্রাপ্তরাও তাঁদের পনশনের সঙ্গে একই হারে ডিএ পাবেন।
রায়গঞ্জ: কেউ একশো শতাংশ বকেয়া ডিএ না পেলে ভোটের ডিউটি না করার হুমকি দিয়েছেন, কেউ আবার নিরাপত্তার অভাব বোধ করে এখন থেকেই ভোটের ডিউটি থেকে নাম কাটানোর জন্য দরবার শুরু করেছেন। উত্তর দিনাজপুর জেলায় পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার জন্য ভোটকর্মী হিসেবে সরকারি কর্মীদের তথ্য নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেই কাজ শুরু হতেই জেলার সরকারি কর্মীদের একাংশের ভোটের কাজ করার ক্ষেত্রে এমনই অনীহার মুখে পড়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, ভোটকর্মীদের বুঝিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। মহকুমাশাসক (রায়গঞ্জ) কিংশুক মাইতির বক্তব্য, “নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী, উপযুক্ত কারণ বাদে সরকারি কর্মীদের পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি করা বাধ্যতামূলক।”
সপ্তাহ দেড়েক আগে জেলাশাসক তথা জেলা পঞ্চায়েত নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা অতিরিক্ত জেলাশাসককে শীর্ষে রেখে জেলায় পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার জন্য দু’টি ‘সেল’ গঠন করেন। এর পরেই জেলার নয়টি ব্লকের প্রতিটি বুথে পঞ্চায়েত ভোট নেওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে জেলার সমস্ত সরকারি দফতর থেকে সেখানে কর্মরত কর্মীদের নাম প্রস্তাবিত ভোটকর্মী হিসেবে নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়। দিন কয়েক আগে ডিএ-র দাবিতে জেলার সরকারি কর্মীদের একাংশ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশকে একশো শতাংশ ডিএ না পেলে ভোটের ‘ডিউটি’ তাঁরা করবেন না বলে হুমকি দেন।
সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের জেলা আহ্বায়ক দুলাল রাজবংশী বলেন, “মঞ্চের সমস্ত সদস্য বকেয়া একশো শতাংশ ডিএ না পেলে পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি না করার পক্ষে।” ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি করতে গিয়ে রায়গঞ্জের এক ভোটকর্মী রাজকুমার রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। পর দিন রেললাইনের ধার থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
রায়গঞ্জের হাতিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিরুদ্ধ সিংহ বলেন, “ভোট লুটের প্রতিবাদ করায় রাজকুমারবাবুকে খুন করা হয়েছে বলে জেলার বেশিরভাগ সরকারি কর্মীর সন্দেহ। তাই অনেক সরকারি কর্মী নিরাপত্তার অভাবে আগামী পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি না করার জন্য এখন থেকেই প্রশাসনের কর্তা ও প্রভাবশালীদের কাছে দরবার শুরু করেছেন।”
রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের তিন শতাংশ ডিএ বাড়লেও তাঁরা খুশি নন। ডিএ মেটানোর দাবিতে শহিদ মিনারের পাশে বসা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বিক্ষোভ ও অনশনকারীরা জানিয়ে দিলেন, তাঁদের এই আন্দোলন চলবে। তাঁরা খুব দ্রুত কর্মবিরতিরও ডাক দেবেন। এ দিকে শহিদ মিনারের পাশে বসা সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বিক্ষোভ ও অনশনকারীদের মধ্যে সুজাতা সাহা নামে এক অনশনকারী বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও আর এন টেগোর হাসপাতালে ভর্তি আছেন সঞ্জীত চক্রবর্তী। আর এক অনশনকারী অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য সোমবার এসএসকেএমে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি সুস্থ হয়ে ফের বিক্ষোভ-মঞ্চে ফিরে এসেছেন। ডিএ বাড়ানোর ঘোষণার কথা শুনে অনিরুদ্ধ বলেন, ‘‘আমরা এই ভিক্ষার দান প্রত্যাখ্যান করছি। কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে ৩৮ শতাংশ বকেয়া ডিএ-র টাকা পেয়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার। তার মধ্যে তিন শতাংশ ছুড়ে দিলেন আমাদের দিকে। এটা আমরা মানব না। আমাদের বিক্ষোভ কর্মসূচি আরও জোরদার হবে।’’

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url